আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ১২ নভেম্বর: অক্টোবর মাসে প্রথমেই চলে এসেছিল শ্রাইক প্রজাতির দু তিনরকমের পাখি। তাদের পেছন পেছন পরবর্তীতে এসেছে বিভিন্ন ধরনের খঞ্জনরা। এসেছে একাধিক প্রজাতির হুইসলিং টিল। ছোট বালুবাতান, বড় বালুবাতানের মত উত্তরবঙ্গের পরিচিত পরিয়াযী পাখিরা।এবার প্রথা মেনেই নভেম্বর মাসের প্রায় প্রথম সপ্তাহের থেকেই উত্তরবঙ্গে জলচর হাঁস প্রজাতির পাখিরাও আসতে শুরু করে দিল।
শিলিগুড়ি লাগোয়া গজলডোবা, ফুলবাড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া রসিকবিল, ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর নারারথলি ঝিলে শুরু হয়েছে পরিয়াযীদের আগমন। বিশেষজ্ঞদের একাংশ ইতিমধ্যে জানিয়েছেন, করোনা আবহে প্রকৃতি অনেকটাই স্বাভাবিক থাকায় এবার সম্ভবত উত্তরবঙ্গে পাখির সংখ্যা ও বৈচিত্র্য দুই বারতে চলেছে শীতের মরসুমে।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে জলচর প্রজাতির মধ্যে খুবই পরিচিত চখাচখী,গ্যাডোওয়াল, কমন ম্যালার্ড, কটন টিল, ব্ল্যাকহেডেড গাল, কমন পোচার্ড ইতিমধ্যেই পাখি প্রেমীদের নজরে এসেছে। তাতপর্যপুর্নভাবে গত কয়েকবছরের মত এবারও অক্টোবর মাসের শেষের দিক থেকেই শীতের অতিথি হিসেবে আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের ঝিলগুলিতে নামতে শুরু করে দিয়েছে লেজার হুইসলিং ডাক।আলিপুরদুয়ারের ১২নং ওয়ার্ডে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী পাখিদের।
শীতের অতিথিরা চলে আসায় পাখিপ্রেমীদের মধ্যেও খুশির হাওয়া। নদী, ঝিল, জঙ্গল এলাকায় অহরহ দেখা যাচ্ছে বার্ড ওয়াচারদের। ন্যাফের কোঅর্ডিনেটর অনিমেশ বসু বলেন, শীতে পরিয়ায়ী পাখি আসবে এটা উত্তরবঙ্গে খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এবার আশা করছি করোনা পরিস্থিতিতে গোটা পৃথিবীর প্রকৃতি অনেকটা অন্যরকম।দীর্ঘ যাত্রাপথ পার হয় যে পাখিগুলি তাদের খুব একটা সমস্যা হয়তো হবে না। পরিবেশ দূষনের মাত্রা অনেকটা কম। আশা করছি পাখির সংখ্যা বারবে।”
তবে অনান্য বছরের তুলনায় এবছর অনেকটা আগেই উত্তরবঙ্গে শীতের অতিথিরা চলে আসায় যথেষ্টই উচ্ছ্বসিত বনাধিকারিক থেকে শুরু করে পাখিপ্রেমিক, পরিবেশবিদরা। সকলেরই আশা নভেম্বর মাসের শেষের সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে সকল পরিয়ায়ী পাখি চলে আসবে। আলিপুরদুয়ার বাডার্স ক্লাবের অন্যতম শিবুন ভৌমিক বলেন, “পাখি পরিবেশের অন্যতম ভাল মন্দ নির্ধারণে সূচকের ভূমিকায় থাকে। আলিপুরদুয়ার জেলা সদরের ঝিলগুলির অবস্থা এখনও ভাল। সেজন্যেই সেখানে পাখি আসবে। তবে ঝিল নিয়ে স্থানীয় মানুষদের আর সচেতন হতে হবে। ঝিলের জল দূষিত হলে হয়ত ওরা আসবে না।” আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের সভাপতি অমল দত্ত বলেন, “আমরা আমাদের পরিবেশ যত সুন্দর রাখবো পাখির সংখ্যা,বৈচিত্র্য ততই বারবে।অনেক পরিয়ায়ী পাখি রয়েছে যারা উত্তরবঙ্গে এসে ফিরে যায়না।এদের আমাদেরই দেখে রাখতে হবে।” বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানান, নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে পাহাড়ে শীত বাড়লে সমতলে নেমে আসে। জয়েন্তীতেও প্রচুর পাখির দেখা মিলবে।