আশিকুজ্জামান আশিক
আমাদের ভারত, ১৩ জানুয়ারি: রাজ্যের নাম ছিল ভূষণা। এ রাজ্যের রাজা ছিলেন সীতারাম রায়। পাবনা থেকে বাগেরহাট ওদিকে বরিশালের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত সীতারামের রাজ্য বিস্তৃত ছিল। বর্তমান মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলায় এই রাজ্যের রাজধানী ছিল।
মোঘলদের বিরুদ্ধে রাজা সীতারামের বীরত্বের ইতিহাস আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে। রাজা সীতারাম ছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাব সরকারের একজন আমলা। যিনি আমলা থেকে জমিদারি এবং পরে স্বীয় প্রতিভা বলে রাজা উপাধি লাভ করেন।
রাজা উপাধি লাভের পর সীতারাম রাজার মতোই রাজ্য বিস্তার করতে থাকেন এবং সেনাবল বৃদ্ধি করে তিনি পার্শ্ববর্তী জমিদারদের ভূ-সম্পত্তি দখল করেন। তিনি নবাব সরকারের রাজস্ব প্রদান বন্ধ করে স্বাধীন, সার্বভৌম রাজার মতোই জমিদারিতে প্রত্যাবর্তন করেন নিজস্ব শাসনব্যবস্থা।
জমিদারি সুরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে সীতারাম এ স্থানটিতে গড়ে তোলেন অসংখ্য দুর্ভেদ্য দুর্গ, কাঁছারি বাড়ি পরিখা পরিবেষ্টিত রাজপ্রাসাদ, পূজা-অর্চনার জন্য দেবালয় নির্মাণ, জনহিতার্থে খনন করেন বেশ কিছু বিশালাকার জলাশয়।
আশার কথা, সরকার দেরিতে হলেও সীতারামের স্থাপনাগুলো সংস্কার ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ শুরু করেছে। দূর থেকে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীরা নান্দনিক স্থাপনাগুলো দেখতে আসেন। এলাকাবাসীর দাবি, সীতারাম রাজার স্থাপনাগুলো সংস্কার করলে এটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে।
আনন্দনাথ রায় লিখিত ফরিদপুরের ইতিহাস ও উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, মুকুন্দরাম-সত্রাজিতের পতনের পর ভূষণা রাজ্যে দেখা দেয় ভীষণ বিশৃঙ্খলা। মগ দস্যুদের অত্যাচারে রাজ্য হয়ে পড়ে জনশূণ্য এবং এক পর্যায়ে জঙ্গলাকীর্ণ প্রায়।
ঠিক ওই সময়েই আবির্ভাব ঘটে রাজা সীতারামের ১৬৫৮-১৭১৪। তিনি মগ দস্যু বিতাড়ণে আর দেশের স্বাধীনতা সুরক্ষায় অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। সীতারামের নির্মাণ করা দূর্গসহ নানান কীর্তির ধংসস্তুপ আজও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভূষণা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে তৎকালীন ভূষণা রাজ্যের রাজধানী বর্তমান মাগুরার মহম্মদপুরে।
#historicalmonumentofbangladesh #ashikuzzamanashik #ashikthetraveler
#সীতারামরায় #মাগুরারমহম্মদপুর #মাগুরাজেলারইতিহাসওঐতিহ্য
সঙ্কলন—অশোক সেনগুপ্ত