পূর্ববঙ্গে হিন্দুদের স্মৃতি (৪১) ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চন্দ্র চৌধুরীর জন্মভিটা

আমাদের ভারত, ৩ ডিসেম্বর: আমরা জানি তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশ থেকে যেসব পরিবার ভারতে স্থায়ী হয়েছেন তাদের পরিচয় বাঙাল। আজ তুলে ধরছি বাংলাদেশে বাঙালদের গৌরবময় অতীতের একটুকরো নিদর্শন হিসেবে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুরেশ চন্দ্র চৌধুরীর টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুরে তাঁর বসতভিটা। যা এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী চেয়েছিলেন টাঙ্গাইলে তাঁর জন্মভূমি নাগরপুরকে তৎকালীন রাজধানী কলকাতার আদলে সাজাতে। পরিবার থেকে প্রাপ্ত ৫৪ একরের জমিদার বাড়িতে ছিল সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতুয়া, হরিণ, ময়না আর শেষ দিকে সৌখিন সুরেশ চৌধুরীর ইচ্ছায় চিড়িয়াখানায় স্থান করে নিয়েছিল বাঘ এবং সিংহও।

৫৪ একরের এই জমিদার বাড়িটিতে বেশকিছু দুই ও তিন তলা ভবন রয়েছে। ভবনগুলোর বেশির ভাগই ধ্বংসের পথে। এই বাড়ির অন্যতম স্থাপনা হলো ঝুলন দালান। প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন শিল্প কর্মে মণ্ডিত এই ভবনে চৌধুরী বংশের নিত্যদিনের পূজা অনুষ্ঠিত হতো। বিশেষ করে শ্রাবণের জ্যোৎস্না তিথিতে সেখানে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের নাটক, যাত্রার আসর হতো। অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের পুরো কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরে গড়া।

ঝুলন দালানের ছাদ থেকে সামনে চোখ রাখলেই দেখা মিলবে বিশাল দিঘি আর তার ওপারে স্বমহিমায় শৈল্পিক কারুকাজ খচিত স্থাপনার নাম ঘোড়ার দালান। জমিদারী পরিচালনা এবং বাবসায়িক প্রয়োজনে চৌধুরী বাড়িতে সুঠাম সুদৃশ্য ঘোড়া পোষা হতো। আর এই ঘোড়া এবং তার তদারকিতে নিয়োজিতদের থাকার জন্য নির্মাণ করা হয় বিশাল ভবন। যা জমিদারদের ঘোড়ার দালান হিসাবে পরিচিত।

সূত্র— মহম্মদ সইফুল ইসলাম পুরনো কলকাতার গল্প ফেসবুক গ্রুপ।
সঙ্কলন— অশোক সেনগুপ্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *