পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১০ নভেম্বর: রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুলের বাজার হলো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ফুলবাজার। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে কোলাঘাট স্টেশন ডাউন এক নম্বর প্লাটফর্মের নীচে গড়ে ওঠা এই ফুলবাজার প্রত্যেকদিন ভোর ৩টে থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বসে।
ওই প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন রেলের খাদের এক কোণে মাত্র ১৪৬৯ বর্গ মিটার জায়গার উপর বসা এই ফুলবাজারে হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে আনুমানিক প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী প্রত্যহ ফুল কেনাবেচার কারণে আসে। রেল দপ্তর বাজারে আগত প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে প্রত্যেক দিন ১০ টাকা ও ফুলব্যবসায়ী এবং দোকানদারদের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত ফেরিওয়ালা(তেবাজারী) টিকিট বাবদ অর্থ আদায় করে। অথচ বাজারে নেই মাথার উপর আচ্ছাদন, নেই ফুলবিক্রির জন্য মেঝে, পানীয় জল ও পর্যাপ্ত আলো, শৌচাগার প্রভৃতির বন্দোবস্ত। ফলস্বরূপ বাজারে আগত ক্রেতা, বিক্রেতা সহ প্রায় ৫ সহস্রাধিক মানুষজনদের প্রত্যহ এক পুঁতিগন্ধময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সৌন্দর্যের প্রতীক ফুল কেনাবেচা করতে হয়। এহেন গুরুত্বপূর্ণ এই ফুলবাজারটিতে ফুল সংরক্ষণ ব্যবস্থা সহ আধুনিক ফুলবাজার হিসেবে গড়ে তোলার দাবিতে আজ কোলাঘাট ফুলবাজার পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে তমলুকের সাংসদ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নতুন জেলা শাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। প্রতিনিধিদলে ছিলেন সমিতির উপদেষ্টা তথা সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র নায়ক, সহকারী সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ কোলে।
নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, গত ২০০০ সালে এই বাজারের বিষয়ে রাজ্যের হর্টিকালচার দপ্তরের মন্ত্রী শৈলেন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী ২০০১ সালের ২৯ জানুয়ারি ফুলবাজারটি পরিদর্শন করেন এবং ২রা এপ্রিল রাইটার্সের রোটান্ডায় রেলওয়ে দপ্তরের খড়্গপুরের উচ্চ আধিকারিকের উপস্থিতিতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তমত বাজারের উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়ে সেই সময় কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও আজও এ ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ করা হয়নি।
এমতাবস্থায় যাতে এইসব পরিষেবামূলক ব্যবস্থা সহ বাজারটিকে দ্রুত আধুনিক ফুলবাজার হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তার উদ্যোগ নেওয়ায় জন্য আজ এই স্মারকলিপি পেশ করা হয়। অবিলম্বে এ ব্যাপারে কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেওয়া না হলে সমিতি, ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ীদের যুক্ত করে রেল অবরোধ সহ বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিতে বাধ্য হবে বলে জানান নারায়ণবাবু।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এইসকল দাবিতে গত ২২ সেপ্টেম্বর সারা বাংলা ফুলচাষি ও ফুলব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে রাজ্যের হর্টিকালচার দপ্তরের মন্ত্রী অরূপ রায় ও সচিব স্মারকি মহাপাত্রকে গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

