সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৫ ফেব্রুয়ারি: বাঁকুড়া জেলাজুড়ে উদ্ভূত হাতি সমস্যার স্হায়ী সমাধানের দাবিতে আজ বাঁকুড়া উত্তর বন বিভাগের ডিএফও’র কাছে ১২ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিল সংগ্রামী গণমঞ্চ।
জেলায় হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হলে অবিলম্বে ময়ূরঝর্ণা প্রকল্পের রূপায়ণ করে বুনো হাতিদের বাসস্থান গড়তে হবে। এই প্রকল্প রূপায়ণ না হওয়া পর্যন্ত বাঁকুড়ার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়ে থাকা দাঁতাল বাহিনীকে জেলার বাইরে পাঠাতে হবে। এছাড়াও হাতির আক্রমণে মৃত্যু হলে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি, বাড়ি ভেঙ্গে দিলে নতুন বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া, ফসলের ক্ষতি হলে ১৫ দিনের মধ্যে বাজারদর অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির দাবি জানানো হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে দলমা থেকে আসা শতাধিক হাতির মধ্যে কিছু হাতিকে ফেরৎ পাঠানো গেলেও ৬৮টি হাতি বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে রেঞ্জগুলিতে ছড়িয়ে গেছে। প্রায় দিন ওই হাতির দল লোকালয়ে বেরিয়ে ব্যাপক হারে ক্ষয়ক্ষতি করছে। ইতিমধ্যে ২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। হাতির আক্রমণে ১ জন গুরুতরভাবে জখম হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দাঁতালদের দাপাদাপিতে অতিষ্ঠ বাঁকুড়ার বনাঞ্চলের অধিবাসীরা। হাতি সমস্যা সমাধানের জন্য গঠিত সংগ্রামী গণমঞ্চ আজ বন দফতর ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আজ বাঁকুড়া জেলাজুড়ে পান্তা পরব থাকায় বাঁকুড়া চলো কর্মসূচি কাটছাট করে একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত ডিএফও’র সাথে আলোচনায় বসেন।
সংগঠনের জেলা সম্পাদক শুভ্রাংশু মুখার্জি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে ময়ূরঝর্ণা প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা বলছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কর্তারা। এনিয়ে বাম জমানার বনমন্ত্রী থেকে তৃণমূল সরকারের বনমন্ত্রী বেলিয়াতোড় এসে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন। কিন্তু সদর্থক পদক্ষেপ কেউ নেননি। মানুষ মরলে কেউ খবর পর্যন্ত নেয় না। শুভ্রাংশু মুখার্জি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হাতির হানায় মৃত্যু হলে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু ফসলের ক্ষতি বা বাড়ি ঘর ভাঙ্গলে তা পেতে বছরের পর বছর পেরিয়ে যায়।
সংগঠনের সভাপতি পূর্ণেন্দু সরকারের অভিযোগ, হাতি বিষয়ে কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু সে টাকা ক্ষতিগ্রস্তরা ন্যায্য ভাবে পায় না। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।
এবিষয়ে অতিরিক্ত বনাধিকারিক ডিকে ঝাঁ বলেন, হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধান, ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়গুলি বন মন্ত্রকের অধীন। দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।