আমাদের ভারত, ৫ এপ্রিল: সারা বিশ্বজুড়ে আজ ১১ লক্ষেরও বেশি মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। মৃত্যু হয়েছে ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের। আর এই মৃত্যু-মিছিল ক্রমশ বাড়ছে। ভারতেও করোনার কালো ছায়া ক্রমশই বাড়ছে। কারণ করোনাকে আটকানোর কোনো টিকা বা ওষুধ কোনও দেশের কাছে নেই। বিশ্বের সমস্ত দেশের বিজ্ঞানীরা এখন ব্যস্ত করোনা ভাইরাসকে আটকানোর ওষুধ খুঁজতে। এরইমধ্যে খানিক আশার আলো দেখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা। তারা দাবি করেছেন এই ভাইরাসকে খতম করার ওষুধের তারা সন্ধান পেয়েছেন।
তাদের কথায় এই ওষুধ আগেই ছিল। ওষুধ হলো অ্যান্টি প্যারাসাইট ড্রাগ। বাংলায় যাকে পরজীবীদের মারার ওষুধ বলে। এই ওষুধ করোনা ভাইরাসকেও মারতে সক্ষম বলে দাবি তাদের।
মেলবোর্নের মোনাস ইউনিভার্সিটি বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইনস্টিটিউট এবং পিটার ডোর্টে ইনস্টিটিউট অফ ইনফেকশন এন্ড ইমিউনিটি, এই দুটি প্রতিষ্ঠান এই গবেষণা করছিল। তারা এই এন্টি প্যারাসাইড ড্রাগ ইভারমেকটিন নিয়ে পরীক্ষা করেন। সেই পরীক্ষায় তারা দেখতে পেয়েছেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস কে মেরে ফেলতে পারছে এই ড্রাগ। আর ওষুধের মাত্র একটা ডোজেই এই কাজ হচ্ছে। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই করোনা ভাইরাসের প্রকোপ কমিয়ে দিচ্ছে এই ড্রাগ বলে দাবি চিকিৎসকদের।
ইভারমেকটিন এফডিএ অনুমোদিত একটি ওষুধ যা এইচআইভি, ডেঙ্গু, ইনফ্লুয়েনঞ্জার মত রোগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে।
কিন্তু এখনও করোনা আক্রান্ত মানুষের ওপর এই ড্রাগ প্রয়োগ করার পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। ডক্টর কেইলাই ওয়াগস্টাফ জানিয়েছেন, ইভারমেকটিন সর্বসম্মত নিরাপদ একটি ওষুধ। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখতে হবে এই ড্রাগটি করোনা আক্রান্ত মানুষের ওপর কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
করোনা যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে তাকে দ্রুত আটকানো দরকার। আর বাজার চলতি ওষুধের মাধ্যমে যদি এটা সম্ভব হয় তাহলে তা মানবজাতির পক্ষে তা মঙ্গলজনক। তবে করোনা ভাইরাসে ওপর ইভারমেকটিন কিভাবে কাজ করছে তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, ওষুধটি অন্যান্য ভাইরাসগুলিতে যেভাবে কাজ করে সেই একই রকম ভাবে কাজ করবে।
সাধারণত অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রে যে কোষগুলি প্রথম সংক্রমিত হয়েছিল এবং অন্যান্য কোষে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই কোষগুলিকে সারিয়ে তোলে। ফলে শরীর তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়। তবে এই ওষুধ করোনা প্রতিষেধক হিসেবে কতটা কার্যকর তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কারণ এই ড্রাগটি শুধুমাত্র ল্যাবেই পরীক্ষা হয়েছে। এখনোও আরো অনেক পরীক্ষা বাকি। তাই পরবর্তী ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা গুলি না হওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বলে বলতে পারবেন না ইভারফেকটিন করোনা আক্রান্ত মানুষকে সারিয়ে তুলতে সক্ষম কিনা। ফলে তাই তার জন্য এখন অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন রাস্তা খোলা নেই।