আমাদের ভারত, জলপাইগুড়ি, ২৬ জুলাই: শেয়ার মার্কেটের লোভ দেখিয়ে অনলাইনে প্রতারণা করে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বড়সড় সাইবার প্রতারণা চক্রের হদিস পেল জলপাইগুড়ি সাইবার থানা। এই ঘটনায় মুর্শিদাবাদ থেকে মাসুদ হোসেন নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার জলপাইগুড়ি সাইবার থানায় সাংবাদিক বৈঠকে বিস্তারিত তথ্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভনিক মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, জলপাইগুড়ির আদরপাড়ার বাসিন্দা শুভ্রজিৎ দে ২০২৪ সালের ৬ অক্টোবর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি জানান, ফেসবুকে একটি লিঙ্কের মাধ্যমে তিনি দুটি হোয়াটসঅ্যাপ ট্রেডিং গ্রুপে যুক্ত হন। প্রথমে অল্প কিছু টাকা লাভ হিসেবে ফেরত পাওয়ায় তাঁর বিশ্বাস জন্মায় এবং ধাপে ধাপে তিনি বেশ কয়েক দফায় অর্থ লগ্নি করেন। পরে “উইথড্রয়াল চার্জ” বা টাকা তুলতে চার্জের নামে আরও বড় অঙ্কের টাকা পাঠাতে বাধ্য হন এবং শেষ পর্যন্ত প্রতারিত হন।
অভিযোগের ভিত্তিতে সাইবার থানার বিশেষ তদন্তকারী দল তদন্ত শুরু করে এবং প্রযুক্তির সাহায্যে মুর্শিদাবাদে হানা দিয়ে মাসুদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তার অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও অভিযুক্তের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, দুটি মোবাইল, একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত কাগজপত্র, নোটারির ফর্ম এবং সাধারণ মানুষের আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে জলপাইগুড়ি আদালতে পেশ করা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, এই চক্রে আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারে, এবং তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, “এটি একটি ক্লাসিক অনলাইন শেয়ার মার্কেট স্ক্যাম। শুরুতে আস্থা তৈরি করে, পরে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিনিয়োগ করার আগে ভালোভাবে যাচাই করে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অচেনা গ্রুপ বা সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক না করাই বুদ্ধিমানের কাজ।”