অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল চালু ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে গণ অবস্থান

আমাদের ভারত, কলকাতা, ৩ ফেব্রুয়ারি: প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন পর্ষদ (পঃ বঃ)-র উদ্যোগে শুক্রবার কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগর মূর্তির পাদদেশে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল চালু ও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নের দাবিতে শিক্ষক-অভিভাবক-বুদ্ধিজীবীদের গণ অবস্থান হয়।

সভায় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চ্যাটার্জি বলেন, ছোটোবেলায় দেখতাম কর্পোরেশন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী উপচে পড়ছে, সেখানে চতুর্থ শ্রেণির শেষে বৃত্তি হত। এখন সেই স্কুলগুলোতে শিক্ষক নেই, পড়ুয়া নেই, শিক্ষার সরঞ্জাম নেই, তারা অবলুপ্তির পথে। মাধ্যমিক স্কুলগুলোরও দশা তাই। পড়ুয়ার সংখ্যা তো বাড়ছে, তাহলে তারা যাচ্ছে কোথায়?

বিমলবাবু বলেন, বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে, ধার-দেনা করেও অভিভাবকরা পাঠাচ্ছেন, সরকার খুব খুশি, কারণ তার দায় কমছে। এটা পরিকল্পিত, সিপিএমের সরকার ইংরেজি তুলে দেওয়ার পর থেকেই এই অবস্থার শুরু। পাশ-ফেল না থাকলে পড়ুয়ারা কী শিখল তার মূল্যায়ন হবে কী করে? কেন্দ্র ও রাজ্য উভয় সরকারই এর জন্য দায়ী।

পর্ষদ সভাপতি ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল সায়েন্স অ্যাকাডেমির বিজ্ঞানী ধ্রুবজ্যোতি মুখোপাধ্যায় বলেন, দেশের জনসাধারণ যাতে প্রকৃত শিক্ষা না পায়, পড়ুয়াদের মধ্যে যাতে যুক্তিবাদী মন তৈরি না হয় তার চেষ্টাই করা হচ্ছে। আমরা সরকারের এই চক্রান্ত প্রতিরোধ করবই।

পর্ষদের অন্যতম সহ সভাপতি অধ্যাপক তরুণকান্তি নস্কর বলেন, আমরা ইংরেজি শেখানোর দাবি করেছিলাম মাতৃভাষার উন্নয়নের জন্য। কেন্দ্র সরকার জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে হিন্দি চাপানোর ষড়যন্ত্র করছে, ইংরেজিকে গুরুত্বহীন করছে। এর ফলে হিন্দি সমেত সমস্ত ভারতীয় ভাষার বিকাশ ব্যাহত হবে, বিশ্ব জ্ঞানভাণ্ডার থেকে ভারতীয় ছাত্ররা দূরে থাকবে।

পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, ১৯৯৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বাংলা বনধের চাপে রাজ্য সরকার ইংরেজি চালু করতে বাধ্য হয়। বর্তমান আন্দোলন এমন পর্যায়ে উন্নীত করা দরকার যাতে সরকার বাধ্য হয় পাশ-ফেল চালু করতে হয়।

বর্তমান সম্পাদক তপন সামন্ত বলেন,’অমৃত কালের’ নাম হল শিক্ষাহীনতা, অশিক্ষা, যুক্তিহীনতা। রাজ্য সরকারের ভূমিকাও তথৈবচ। পর্ষদ এই অবস্থার পরিবর্তনে বদ্ধপরিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *