লক্ষ্মী প্রতিমা দর্শনে মাস্ক বাধ্যতামূলক, বার্তা দিচ্ছে দুর্গাপুরের প্রাচীন বাড়ি

দীপিকা সরকার, আমাদের ভারত, দুর্গাপুর, ৩০ অক্টোবর:
মন্দিরে লক্ষ্মী প্রতিমা দর্শন করতে এলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। করোনা সচেতনতায় এই বার্তা দেওয়া হচ্ছে দুর্গাপুরের দুটি প্রাচীন বাড়ির লক্ষ্মী পুজোতে। এমনকি পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার সময় ভক্তদের কয়েকটি দলে  ভাগ করে নেওয়া হবে। মন্দির চত্বরে করা হয়েছে স্যানিটাইজেশন। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে নরনারায়ণ সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।

দুর্গাপুরের  অণ্ডাল থানার খাঁদরা গ্রামের সিংহ বাড়ির  লক্ষ্মীপূজো ১৭১ বছরের পুরোনো। সিংহ বাড়ির সদস্যরা জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় ১২টির বেশি দুর্গাপুজো হয় যেগুলি কয়েকশো বছরের প্রাচীন। কিন্তু দুর্গাপুজোর পরে গ্রামে কোনঈ লক্ষ্মীপুজো হতো না।  সেই সময় মুর্শিদাবাদের কান্দি এলাকার বাসিন্দা সুধাকৃষ্ণ সিংহ এই এলাকায় কর্মসূত্রে থাকতেন। গ্রামে কোনও লক্ষ্মীপুজো না হওয়ায় তিনি প্রথম লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন । সেই পুজো সিংহবাড়ির হলেও গ্রামের মানুষ ওই লক্ষ্মীপুজো নিয়ে মেতে ওঠেন।  হতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নরনারায়ণ সেবাও। কিন্তু এই বছরে করোনা পরিস্থিতির জন্য পুজোয় কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছে।

পরিবারের সদস্য অনুপ সিংহ বলেন, আমাদের পূজো প্রায় আড়াই দিন ধরে চলে। লক্ষ্মী প্রতিমা মাটির তৈরী করা হয়। প্রতিমার বিশেষত্ব হলো মা লক্ষ্মীর দুই পাশে দুটি পরী থাকে। তবে কি কারণে বংশধররা এই পরী রাখতো প্রতিমার পাশে সঠিকভাবে জানা নেই। এই বছর আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খাওয়াদাওয়া সমস্ত রকম বন্ধ রেখেছি। পুজোতে প্রায় ২০০ জন পুষ্পাঞ্জলি দেয়। এবার ১০ জন করে মন্দিরে পুষ্পাঞ্জলি দেবে। অনবরত মন্দিরের ভেতরে ও বাইরে স্যানিটাইজ করা হবে। মাস্ক পড়ে আসতে হবে ভক্তদের। যারা মাস্ক না পড়ে আসবে তাঁদের মাস্ক দেওয়া হবে। করোনা বিধিনিষেধ সবরকম মেনেই হবে এবারের পূজো।

অন্যদিকে কাঁকসা থানার বিহারপুরের মণ্ডল বাড়ির  লক্ষ্মীপুজো  ১২৩ বছরের পুরোনো।  মণ্ডলবাড়ির পরিবার   সূত্রে জানা গেছে, ওই পরিবারের কর্তা ত্রৈলোক্যনাথ মন্ডলকে বহুবছর আগে দেবীলক্ষ্মীর স্বপ্নাদেশে বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত করে আরাধনা করার আদেশ দেন। সেই মত তিনি বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। বছর ঘুরতেই পারিবারিক আর্থিক সংঙ্কট কেটে ওঠে। এরপর থেকে গ্রামের মানুষদের নিয়ে প্রতিবছর পুজোতে দু’দিন ধরে নরনারায়ণ সেবার আয়োজন করা হয়।

পরিবারের সদস্য অর্পণ মন্ডল বলেন, আমাদের প্রতিমা পুজোর আগের রাতে সম্পূর্ণ করা হয়। পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার পরে প্রসাদ খাওয়া হয়। এবং মাছ খেয়ে নিরামিষ ভঙ্গ করা হয়। প্রতিবছর লক্ষ্মী পুজোতে দুদিন ধরে কয়েকশো মানুষ খাওয়াদাওয়া করেন। কিন্তু এই বছর করোনা পরিস্থিতিতে সব বন্ধ। শুধুমাত্র পরিবারের লোকজনদের নিয়েই নিয়ম মেনে পুজো করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *