আমাদের ভারত, ২৯ অক্টোবর: বাংলায় এসআইআর শুরু হতেই বিতর্ক শুরু হয়ে গেল। বাঁকুড়া জেলার একটি গ্রামে মিলল বহু ভুয়ো ভোটারের খোঁজ। আপাদমস্তক একটি হিন্দু গ্রামের ভোটার তালিকায় একের পর এক মুসলিম ভোটারের নাম পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। কিন্তু এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস দায়ী করেছে নির্বাচন কমিশনকে।
নির্বাচন কমিশনের তরফে গতকালই রাজ্যে এসআই আর- এর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এর ফলে ভুয়ো ভোটারদের চিহ্নিত করে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার মাঝে বাঁকুড়ার এক নম্বর ব্লকের শ্যামপুর গ্রামের ঘটনায় বিতর্ক শুরু হয়েছে। কোনো কালেই এই গ্রামে কোনো মুসলিম পরিবারের বাস ছিল না।আপাদমস্তক হিন্দু গ্রাম হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু সেই গ্রামের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে একাধিক মুসলিম ভোটারের। ভোটার তালিকায় থাকা সেই সব নামের ব্যক্তিদের গ্রামের কেউ চেনেন না পর্যন্ত। তাহলে কিভাবে ভোটার তালিকায় ঢুকলো এই নামগুলি?
এই গ্রামের ২৮৫ নম্বর বুথ, যেখানে ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে মোট ১০৪৬ জন ভোটারের। সেই ভোটার তালিকায় নিজেদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করতে গিয়ে স্থানীয়রা দেখেন এই তালিকায় একের পর এক সংখ্যালঘু ভোটারের নাম রয়েছে। ভোটার তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে সুয়েরা বানু খাতুন, ৩২২ নম্বরে রয়েছে রিপন মলিক,৩৩৩ নম্বরে রয়েছে মুক্তারা খাতুন, ৪৮৫ নম্বরের রয়েছে আকলিন মোস্তাক মিদ্দার নাম। প্রত্যেকটি নামের পাশে বাবার নাম, বাড়ির নম্বর, বয়স, ছবি, এমনকি ভোটার কার্ডের নম্বরও রয়েছে। এদের প্রত্যেকের বয়স ২২ থেকে ২৩ বছর।
স্থানীয়দের দাবি, শ্যামপুর গ্রাম তো দূরের কথা, আশপাশের গ্রামেও কোনো কালে কোনো সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস ছিল না। আজও নেই। তাহলে কিভাবে নাম ঢুকলো ভোটার তালিকায়? এই ঘটনায় অবাক স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকারের দাবি, ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধরনের ভুয়ো ভোটারদের নাম ভোটার তালিকায় তুলে রেখে দেওয়া হয়েছে। এস আই আর চলাকালীন বিএলওদের এই তথ্য দিয়ে নামগুলি তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হবে।
অন্যদিকে তৃণমূল, ভোটার তালিকায় ভুয়ো ভোটারদের অস্তিত্ব মেনে নিয়ে বলেছে, প্রযুক্তিগত ভুল বা আবেদনের ত্রুটির কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। এরজন্য দায়ী নির্বাচন কমিশন। শাসক দলের দাবি, স্বাভাবিক নিয়মেই এই ভুয়ো নাম বাদ চলে যাবে।

