আমাদের ভারত,১৭ ডিসেম্বর: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় সম্প্রতি রাজ্যে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়ে খোঁজ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজির। কিন্তু কেউই তার আহ্বানে সাড়া দেননি। তাই আর দেরি না করে এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে ডেকে পাঠালেন রাজ্যপাল জাষগদীপ ধনকর।
রাজ্যের পরিস্থিতি কি? তা জানতে প্রশাসন এবং পুলিশের তরফে তাকে সাহায্য না করায় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে তিনি তলব করেছেন। টুইট করে একথা জানান ধনকর। মঙ্গলবার সুবিধামতো সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে যাওয়ার কথা বলেছেন রাজ্যপাল। আর রাজ্যপালের এই তলবে স্পষ্ট হয়েছে চরমে উঠেছে নবান্ন-রাজভবনের দ্বন্দ্ব।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজ্যের শাসক দলের অবস্থান নিয়ে সরাসরি বিরোধিতা না করলেও বিভিন্ন কথার মাধ্যমে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের ভূমিকায় তিনি অসন্তুষ্ট। কলকাতার বুকে হওয়া তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচিকে অসাংবিধানিক বলেও মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল। প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের নিরাপত্তা নিয়ে। প্রতিবাদের নামে লাগাতার হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জগদীপ ধনকর।
আর এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য প্রশাসন কি ভূমিকা নিচ্ছে তার বিস্তারিত তথ্য জানতে তিনি ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা ও রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে। কিন্তু দুজনের কেউই রাজ্যপালকে জবাব তো দেনইনি এমনকি রাজ্যপালের সঙ্গে রাজভবনে গিয়ে দেখাও করেননি। ফলে সারাদিন অপেক্ষার পর বিকেল বেলায় রাজ্যপাল টুইটারের ক্ষোভ উগরে দেন। লেখেন ডিজি এবং মুখ্য সচিব যে রাজভবনে আসতে পারবেন না তার পাল্টা বার্তা দেওয়ার সৌজন্যটুকুও তারা দেখান নেই। রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের আচরণে তিনি স্তম্বিত।
তার কিছু পরে আবার একটি টুইট করে রাজ্যপাল ঘোষণা করেন তিনি এবার মুখ্যমন্ত্রীকে সরাসরি রাজভবনে ডাকছেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কাছ থেকেই তিনি সবটা শুনতে চান। নিজের সময়-সুযোগ মতো রাজভবনে আসার জন্য তলব করেন তিনি।
এরপর সন্ধ্যেবেলায় মুখ্যমন্ত্রী চিঠি লিখে রাজ্যপালকে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন,”আপনার এত টুইটার বিবৃতি দেখে আমি দুঃখিত। কিন্তু আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার যথেষ্ট শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছে।” আর এতেই স্পষ্ট করে দেন তিনি এড়িয়ে যেতে চাইছেন রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। রাতে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা চিঠি লিখেন রাজ্যপাল। চিঠিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রতিক্রিয়ায় তিনি ব্যথিত। রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই ভূমিকা মোটেই প্রশংসনীয় নয় বলে জানিয়ে দেন রাজ্যপাল।