আমাদের ভারত, ৫ অক্টোবর:
আর জি কর কাণ্ডের বিচার চেয়ে যখন প্রতিবাদের ঢেউ উঠেছে রাজ্যে, তখনই আরো একটি ভয়াবহ ঘটনা প্রকাশ্যে এলো। এবার জয়নগরের একটি ৯ বছরের বালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাকে ঘিরে তুলকালাম পরিস্থিতি জয়নগরের মহিষমারি এলাকায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দেবীপক্ষের সূচনাতেও নিস্তার নেই বাংলার মেয়েদের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গুন্ডা–বদমাইশ, মাতাল, ধর্ষকদের মুখ্যমন্ত্রী উনি সাধারণ মানুষের মুখ্যমন্ত্রী নন।
কুলতলির কৃপাখালির বাসিন্দা এক ৯ বছরের ছাত্রী গতকাল দুপুরে জয়নগরের মহিষমারিতে টিউশন পড়তে গিয়েছিল। সন্ধার পর বাড়ি না ফেরার জয়নগর থানার দ্বারস্থ হয় পরিবার, অভিযোগ পুলিশ ডায়েরি নেয়নি। রাতে কুলতলির কৃপাখালিতে বাড়ির কাছে একটি জলা জমি থেকে বালিকার দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কি কারনে খুন খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনার তীব্র ভাষায় নিন্দা করেছেন সুকান্ত মজুমদার। নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, স্তম্ভিত শিহরিত! কুলতলি থানা এলাকায় টিউশন পড়ে ফেরার পথে বলপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হলো চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে। পরে নদীর চর থেকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে তার নিথর দেহ। মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দেবীপক্ষে সূচনাতেও নিস্তার নেই বাংলার মেয়েদের। তিনি প্রশ্ন তোলেন “আপনার অপশাসনে আর কতগুলি বাংলার মেয়ের এই পরিণতি হবে?”
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে অভিযোগ নেয়নি। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশেই পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। উনি বলেছেন, সহজে এফআইআর নেবেন না।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, দেবী পক্ষের মধ্যে আমার ঘরের দুর্গার সাথে রেপ হচ্ছে। মানুষ ওখানে যে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, সেটা শুধু পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয় এটা হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহূর্তে রাজ্যটাকে সামলাতে পারছেন না। বাংলার মানুষের মঙ্গলের জন্য এই সরকারের যাওয়া উচিত। না হলে বাংলার মানুষের ভবিষ্যৎ খুব অন্ধকারের দিকে যাচ্ছে।” তিনি প্রশ্ন করেন, “আমাদের ঘরের মেয়েদের যদি মান সম্মান ইজ্জত না থাকে কেন দুর্গার পুজো করবো আমরা? কাকে নিয়ে উৎসবে মাতব? মুখ্যমন্ত্রীর কথা মত বাড়ির মেয়েরা সুরক্ষিত থাকছে না, তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের ধর্ষণ করা হচ্ছে।” তার কথায়, গোটা বাংলাটাই অসুরক্ষিত। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী গুন্ডা–বদমাশ, মাতাল, ধর্ষকদের মুখ্যমন্ত্রী, সাধারণ মানুষের নয়।
প্রসঙ্গত ১০ বছরের বালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় জয়নগরের মহিষমারি এলাকায় ধুন্দুমার কান্ড বেঁধে যায়। দক্ষিণ বারাসাত থেকে মহিষমারি যাওয়ার রাস্তা অবরোধ হয়। পুলিশকে ধাওয়া করে ঝাঁটা পেটা করেন মহিলারা। লাঠি নিয়ে মহিষ মারি পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে ভাঙ্গচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। প্রাণ ভয় লুকিয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জয়নগরের বাসিন্দা এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, অভিযুক্তের বাড়িতেও চড়াও হয় আম জনতা।
কুলতলির চতুর্থ শ্রেণির নাবালিকাকে পৈশাচিক ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় ‘অপদার্থ’ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে আগামীকাল কুলতলী থানা ঘেরাও অভিযান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। এই কর্মসূচিতূ নেতৃত্ব দেবেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মাননীয় সুকান্ত মজুমদার। ইতিমধ্যেই তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।