আমাদের ভারত, ২১ আগস্ট: “পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তাঁর প্রশাসন ওবিসি সার্টিফিকেটকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার করার চক্রান্ত বরাবরই করে এসেছেন। এই অপব্যবহারের নিদর্শন আবারও প্রকাশ্যে।” বৃহস্পতিবার এক্সবার্তায় একথা লিখেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি লিখেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদতে ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্র দাখিল করে ওবিসি সংরক্ষিত আসনগুলিতে অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এর জ্বলন্ত উদাহরণ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চণ্ডীপুর ব্লকের ঈশ্বরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীমতী খুকুরানি মণ্ডল ঘোড়াই। তিনি ভুয়ো ওবিসি শংসাপত্র দাখিল করে ওবিসি সংরক্ষিত আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন প্রধানের পদই শুধু নয়, পঞ্চায়েত সদস্যের পদও তিনি খোয়াতে চলেছেন।
এই উদাহরণ হিমশৈলের চূড়া মাত্র। সঠিক নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সারা রাজ্যজুড়ে এমন হাজার হাজার শ্রীমতি খুকুরানি মন্ডল ঘোড়াই ধরা পড়বেন, যারা ভুয়ো শংসাপত্রের অপব্যবহার করে সংরক্ষিত আসনগুলিতে অবৈধ ভাবে নির্বাচিত হয়ে বসে রয়েছেন। এদেরকে এই সব ভুয়ো শংসাপত্র পাইয়ে দিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন, একেবারে তাঁর অঙ্গুলিহেলনে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক স্বার্থে ওবিসি শংসাপত্রকে অপব্যবহার করে শুধুমাত্র দলীয় নেতাদের ওবিসি সংরক্ষিত আসন থেকে জিতিয়ে এনেছেন। এ ছাড়াও মুসলিম সম্প্রদায়কে তোষণ করার অসৎ উদ্দেশ্যে ও ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহারের স্বার্থে বেআইনিভাবে ওবিসির সমস্ত সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। যাতে তারা প্রকৃত ওবিসি তালিকাভুক্ত সম্প্রদায়ের ভাগের সরকারি চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগের ক্ষেত্রে সুবিধা পান।
এর ফলেই আজ রাজ্যের বর্তমান শিক্ষা-সংকট দেখা দিয়েছে যা প্রশাসনিক দুষ্কর্মের জ্বলন্ত প্রতিফলন। মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট মমতা সরকারের প্রণীত বিতর্কিত ওবিসি তালিকা বাতিল করেছিলেন, কিন্তু রায় মানার পরিবর্তে সরকার মামলাকে দীর্ঘায়িত করেছে। যার ফলে উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হবার তিনমাসাধিক কাল অতিবাহিত। এর পরেও উচ্চশিক্ষার জন্য সরকারি কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে রয়েছে।
শুধু তাই নয় জয়েন্ট এন্ট্রান্স এর ফলও এই কারণেই প্রকাশ করেনি রাজ্য সরকার। যার কারণে ৫ লক্ষাধিক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের বাধ্য হয়েই রাজ্যের বাইরে ভর্তি হতে হচ্ছে, আবার অনেককেই বেসরকারি কলেজে উচ্চশিক্ষার জন্য বিপুল খরচ বহন করতে হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষন নীতি আর ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির বলি। ওবিসি সংরক্ষণের মূল উদ্দেশ্য কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের খেয়াল খুশি মতো সম্পূর্ণ অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে ওবিসি নিয়ে নিম্ন মানের রাজনীতি করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”