আমাদের ভারত,শ্রীরূপা চক্রবর্তী,৩ জানুয়ারি:প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বঙ্গ বিজেপির সমস্ত নেতাই মমতাকে পাকিস্তানের সুরে কথা বলার জন্য তোপ দেগেছেন। শুক্রবার শিলিগুড়িতে সিএএ বিরোধী মিছিল শুরুর আগেই বিজেপির এই কটাক্ষের পাল্টা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,’কিছু বললেই ওরা বলছে পাকিস্তানের চলে যাও। আমাদের এত বড় গণতন্ত্র। পাকিস্তানের কথা কেন বলব? হিন্দুস্থানের কথা বলবো।’ মোদীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনি কি পাকিস্তানের অ্যাম্বেসেডর? নিজের দেশ নিয়ে কোনো কথা নেই, শুধু পাকিস্তান নিয়ে কথা।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার কর্নাটকের জনসভা থেকে মোদী সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন,”যদি স্লোগান দিতেই হয় তাহলে তারা পাকিস্তানের অত্যাচারিত সংখ্যালঘুদের জন্য দিক। কেন পাকিস্তানের নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের জন্য চিৎকার করছেন না? প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী। কেন কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলি পাকিস্তান থেকে চলে আসা অত্যাচারিত উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে?” মোদী বলেন, যদি আন্দোলন করতেই হয় তাহলে পাকিস্তান ৭০ বছর ধরে যে অন্যায় করে আসছে তার বিরুদ্ধেই বলুন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা সেদেশের নিপীড়িত। কোনওরকমে তারা ভারতে পালিয়ে এসেছেন। কিন্তু কংগ্রেস ও তার সহযোগী দল বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কিছুই বলছেন না তারা কেবল উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে মিছিল বার করছে।
এদিন এই কটাক্ষের জবাব দিয়েই মমতা বলেন, “প্রশ্ন করছি, খাবার কই? চাকরি কই? নাগরিকত্ব কই? শুধু বলছে, পাকিস্তানে চলে যাও। কেন যাব এটা আমাদের দেশ। আমি এই দেশের কথা বলব।” তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৭০ বছর পর আমাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে এটা মানবতার লজ্জা।
বিজেপির নেতারা সিএএ বিরোধি আন্দোলনকে পাকিস্তানের সঙ্গে বিরোধীদের জুড়ে দিতে চাইছেন। বলছেন সিএএ বিরোধীরা আসলে পাকিস্তানের হয়ে কথা বলছেন। এদিন মমতার এই অভিযোগের বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন। মমতা বোঝাতে চাইলেন দেশের মানুষের অর্থনৈতিক বিষয়গুলির দিক থেকে নজর ঘোরাতেই প্রধানমন্ত্রী বারবার পাকিস্তানের প্রসঙ্গ তুলে আনছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর আবারও স্পষ্ট করে দেন বাংলায় এনআরসি কিংবা সিএএ বা এনপিআর কোনওটাই হবে না। জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই আন্দোলন চলবে। আগামী ৯ জানুয়ারি বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা পর্যন্ত মিছিল করবে তৃণমূল, ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।