আমাদের ভারত, ২৯ অক্টোবর: পানিহাটিতে এনআরসি আতঙ্কে প্রৌঢ়ের আত্মহত্যার ঘটনা ঘিরে তরজা তুঙ্গে উঠেছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একাধারে বিজেপি ও কমিশনকে হুমকি যেমন দিয়েছেন, তেমনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন।
বাংলায় এসআইআর শুরু হতেই প্রদীপ কর নামে বছর ৫৭-র পানিহাটির এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘিরে তরজা শুরু হয়েছে। জানাগেছে, প্রদীপ কর এনআরসি নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন। সুইসাইড নোটে সেই কথাই লিখে আত্মঘাতী হয়েছেন। এনআরসি আতঙ্কের কথা তুলে ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার পানিহাটিতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। হুঁশিয়ারি দেন নির্বাচন কমিশন তথা বিজেপি নেতাদের। তাঁর হুমকি, এসআইআর- এ একটিও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে এক লাখ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে কমিশনের অফিস চড়াও হবেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা দিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “প্রদীপ করের মৃত্যুর জন্য দায়ী তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার দলবল, কারণ এসআইআর নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণই নেই। এসআইআর’কে ভয়ংকর ভাবে রাজ্যের মানুষের সামনে তুলে ধরার যারা চেষ্টা করেছেন তারা হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই তারাই দায়ী প্রদীপ করের মৃত্যুর জন্য।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, তিনি কেন মারা গেছেন কিভাবে মারা গেছেন তার তদন্ত প্রয়োজন। অনেক রকম কথা উঠে আসছে। শুনছি নাকি ওনার হাতের চারটে আঙ্গুল নেই। তাহলে লিখলেন কি করে? উনি পড়াশোনা জানেন না। সব থেকে বড় কথা, একটা মানুষ চিন্তা তখনই করে যখন তার কিছু নেগেটিভ হবার কথা। তার ফ্যামিলি নেই, তিনি অবিবাহিত। সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই সব প্রশ্নের উত্তর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়’কে দিতে হবে।
নির্বাচন কমিশনারকে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদকের আক্রমণ করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জ্ঞানেশ কুমারকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চ্যালেঞ্জ করছেন তার কারণ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন তাদের যে দুরভিসন্ধি পশ্চিমবঙ্গকে পশ্চিম বাংলাদেশ তৈরি করার, ইসলামিক জেহাদিদের রাজ্য তৈরি করার এবং রাজ্যকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে নির্বাচন কমিশনের এই এসআইআর। সেই জন্য তিনি এই ধরনের কথাবার্তা বলছেন।”
এছাড়াও এই প্রসঙ্গে ২০০২ সালের একটি ভোটার তালিকা সামনে এনেছে বিজেপি। সেই তালিকায় মৃত প্রদীপ করের নাম রয়েছে। বিজেপির দেওয়া বিধানসভার ৮৩ নম্বর পার্টের তালিকায় ১৬ নম্বরে প্রদীপ করের নাম রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। বিজেপি দাবি করেছে, এসআইআর- এর সঙ্গে তার মৃত্যুর কোনো যোগসূত্র নেই।
প্রসঙ্গত, প্রদীপ করের সুইসাইড নোটে লেখা আছে এনআরসি’র কারণে আত্মঘাতী হচ্ছেন। দেশ ভাগের যন্ত্রণার উল্লেখ রয়েছে। ১৯৭১ সালে উদ্বাস্তু হিসেবে চলে আসেন তিনি। জন্মের শংসাপত্র, জমির দলিল ছিল না বলে আতঙ্ক প্রকাশ পেয়েছে তার ডাইরিতে। তাই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে
জানাগেছে।

