সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৭ ফেব্রুয়ারি: সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানেও বিজেপিকে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বাঁকুড়া শহর লাগোয়া বলরামপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত প্রশাসনিক সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা করছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাংলার মানুষকে ভাতে মারার পরিকল্পনা, ওরা(কেন্দ্রীয় সরকার)বলছে টাকা দেওয়া যাবে না, ১০০ দিনের কাজের টাকা হবে না, রাস্তা ঘাট উন্নয়ন হবে না। আমাদের টাকা নিয়ে বলছে টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।

জেলা থেকে নির্বাচিত দুই বিজেপি সাংসদের নাম উল্লেখ না তিনি করে বলেন, এখানের দু’জন সাংসদ রয়েছেন তারা কি করছেন। ভোটের সময় এরা আসেন ভোট নিয়ে পালিয়ে যান। জেলার অধিকাংশ বিধানসভায় বিজেপির এমএলএ, তারা কি করছেন? সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন। তার পূর্বেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার উল্লেখ করে শুধুমাত্র বিজেপিকেই তুলোধোনা করে গেলেন তিনি।

সম্প্রতি রাজ্য সরকারি কর্মীরা ডি’এর দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে তারা নির্বাচনে কাজ করতে পারবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন। আগামী ২০/২১ তারিখে তারা ফের কর্মবিরতি করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সূত্র ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি জাদুকর নই। গতকাল পুরুলিয়ায় সভায় বক্তব্যের সুরেই তিনি আজও বলেন, আমি জাদুকর নই। টাকা নেই, আর কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। তবুও রাজ্য বাজেটে তিন শতাংশ ডিএ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানে তিনি একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ইন্দাসের সুলেখা বেগমের হাতে রেশন দোকানের লাইসেন্স তুলে দিয়ে তিনি বলেন, ১লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষের কাছে ডাইরেক্ট পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। মোটামুটি ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন হয় অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে।
সভায় জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১১ বছরে কোনো মাওবাদী হামলা হয়নি, এটা আমাদের সরকারের গর্ব, বাঁকুড়ার গর্ব। এখানে কন্যাশ্রী হচ্ছে মেয়েদের গর্ব। তিনি বলেন, ৩২০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গকে জুড়বে এই সড়ক পথ। এটা হয়ে গেলে বাঁকুড়ার একটা নতুন পাওনা হবে। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য ইরিগেশন ট্যাক্স তুলে দেওয়া হয়েছে, এখানের পর্যটনের সুবিধার জন্য হোম টু্রিজম করেছি, ওবিসিদের জন্য ক্লাস ফাইভ থেকে ৫০০ টাকার মেধাশ্রী প্রকল্প নিয়ে এসেছি। বিনা পয়সায় খাদ্য দিই।

তিনি বিষ্ণুপুর মিউজিক ঘরানার ও ডোকরা শিল্পের প্রশংসা করে বলেন, শালপাতা ও কাগজের ব্যাগ প্রশংসা রাখে। কাশফুলের বালিশেরও উল্লেখ করেন তিনি। সভায় উপস্হিত বিপুল সংখ্যক ছাএ ছাত্রীদের উৎসাহিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ বাঁকুড়া জেলাতেই ৩৭ হাজার ছাত্র ছাত্রী সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল পাবে, ২৭ হাজার লক্ষ্মীর ভান্ডার পাবে,৪১হাজার স্বাস্হ্য সাথী পাবে। এদিনের সভামঞ্চেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন লক্ষ্মীর ভান্ডারে যারা ৫০০ টাকা পান, ৬০ বছর হয়ে গেলে মাসে হাজার টাকা পাবেন। সভার শেষে তিনি সবার সাথে জাতীয় সঙ্গীত গান।

