আমাদের ভারত, ৯ জুন: করোনা নিয়ে রাজ্যবাসীকে অকারণে আতঙ্কিত না হতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে মানুষকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি দেশে করোনা সংক্রমণের ঘটনা নিয়ে সোমবার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের পর নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করেন এবং জানান যে, পরিস্থিতি এখনো সেই স্তর পর্যন্ত পৌছায়নি।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে সরকারও এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। তবে যদি তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয় তার জন্য প্রশাসনিক স্তরে প্রস্তুতি সেরে রাখতে বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অযথা ভয় না পেয়ে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সেই পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। ভারতে ১৩০ কোটি মানুষ বাস করে। তার মধ্যে সারা ভারতে হাতে গুনে চার-পাঁচ হাজারের মতো ঘটনা ঘটেছে। তিনি রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, কোভিড নিয়ে এখনই আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এখন স্বাভাবিক অবস্থা বজায় থাকবে।
তবে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য নিজেদের মতো করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে যাদের কোমর্বিডিটি, ফুসফুস বা হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের অর্থাৎ বয়স্কদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেক সময় সর্দি-কাশি হলে বুকে কফ জমে থাকলেও শ্বাসকষ্ট হয়। এমন ক্ষেত্রে ডাক্তার দেখিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এক্ষেত্রে অযৌক্তিক খরচ না করে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর জন্য বলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সর্দি- কাশি হলে ডাক্তার দেখানোর চেষ্টা করুন। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান। তাহলে অকারণে কোনো একটা অসুখের নামে বেশি টাকা খরচ হবে না। যার সত্যিই প্রয়োজন, তাকে যা যা দেওয়া দরকার সবই সরকারি হাসপাতালে আছে। এখন করোনা টিকাও বেরিয়ে গিয়েছে, এবং তা ইতিমধ্যেই সকলেই নিয়ে নিয়েছেন। সে কথাও সাংবাদিক বৈঠকে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যবাসীকে ভয় না পাওয়ার অনুরোধ করে মমতা বলেন, এটি এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা। তাঁর কথায়, বর্ষাকালে বা শীতকালে একটু সর্দি কাশি হয়, সেটার মাত্রা কমে গিয়েছে।
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকের সময় উপস্থিত ছিলেন সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। তিনিও আশ্বস্ত করে বলেন, সম্প্রতিক ভেরিয়েন্ট নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের শেষ বড় ঢেউটি হয়েছিল ওমিক্রণ ভেরিয়েন্টের জন্য। সেটি একটু পাল্টে গিয়ে এটি এসেছে। এটি ওমিক্রণেরই একটি সাব-টাইপ। এটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও উদ্বেগের বলে ঘোষণা করেনি। সাধারণ সর্দি, কাশি, জ্বরের মতোই এটি হবে এবং দ্রুত চলে যাবে বলে আশা করছি।