আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ২৯ অক্টোবর: উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলের মৃত বিজেপি কর্মী মিলন হালদারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার দুপুরে লকেট চট্টোপাধ্যায় জগদ্দল গ্রামীণ মণ্ডলের ৫৬ নম্বরের বুথ সভাপতি মৃত মিলন হালদারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি মিলন হালদারের স্ত্রী ও নাবালিকা দুই সন্তানের সঙ্গে কথা বলে বিজেপি সমর্থিত এই পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। মিলন হালদারের মৃত্যুর ঘটনাকে খুন বলে দাবি করেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,”মিলন হালদারের খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রশাসন এই ঘটনাকে কোভিড বলে চালাতে চাইছে, যাতে ময়না তদন্ত করতে না হয়। আমরা এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মিলন হালদার মহাষ্টমীর রাতে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে ব্যারাকপুর
বিএন বসু মহকুমা হাসপাতালে ও পরে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কলকাতার হাসপাতালে বুধবার ভোর রাতে তার মৃত্যু হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, মিলন কোভিভ পজিটিভ ছিল। তাই মৃতের পরিবারের সদস্যদের হাতে দেহ দিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে হাসপাতালের কোভিড তথ্য মানতে নারাজ মৃতের পরিবার। তাদের বক্তব্য, মহাষ্টমীর রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে ছিল মিলনকে। সেই ঘটনায় পরে তার মৃত্যু হয়েছে। এখন সত্যি ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিলনের মৃত্যুর ঘটনাকে কোভিড বলে চালানো হচ্ছে। এদিন জগদ্দলের চণ্ডী তলায় মৃত ওই বিজেপি কর্মীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের শাসকদল কি ভেবেছে ? ওরা একের পর এক বিজেপি কর্মীদের খুন করবে, আমরা চুপ করে বসে থাকব। তা হবে না। এই ব্যারাকপুরে কিছুদিন আগেই মণীশ শুক্লা টিটাগড় থানার সামনে প্রকাশ্যে খুন হল, সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আসল অপরাধী এখনো পর্যন্ত ধরা পড়েনি। পুলিশের মদত ছাড়া সেই ঘটনা ঘটতে পারে না। ফের আমাদের দলের বুথ সভাপতিকে এভাবে পিটিয়ে খুন করে এখন কোভিড বলে চালাতে চাইছে, যাতে পোস্টমর্টেম না করতে হয়। কি ভেবেছে প্রশাসন ওদের হাতে বলে ডাক্তার, অসুস্থতার রিপোর্ট যা ইচ্ছা তাই করবে? আমরা এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করছি। স্বাস্থ্য ভবনের আইসিএমআরের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, সেই নিয়ম মেনে এই ঘটনার তদন্ত দাবি করছি আমরা। ওরা এখন ষড়যন্ত্র করে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা করছে। বুথ সভাপতিকে খুন করল, যাতে বুথে কেউ বসতে না পারে। ওরা ভুল করছে। যত বিজেপিকে মারবে, তত বিজেপি শক্তিশালী হবে রাজ্যে। মিলন হালদারের পরিবারের পাশে বিজেপি আছে, আগামী দিনেও থাকবে। আমরা এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়ব।”
এদিন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিলন হালদারের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন ব্যারাকপুর বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উমা শঙ্কর সিং, বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্র সহ বিজেপির এক প্রতিনিধি দল। এদিকে মিলন হালদারকে মারধরের ঘটনায় জগদ্দল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল আগেই, দাবি মৃতের পরিবারের সদস্যদের। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতেই মিলন হালদারের মৃত্যুকে কোভিড বলে চালাতে চাইছে, যাতে মৃতদেহের ময়না তদন্ত না হয়। যদিও মিলন হালদারের মৃত্যুর ঘটনায় তৃণমূলের কোন যোগ নেই বলে আগেই দাবি করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।