আমাদের ভারত, ১৪ এপ্রিল:
প্রত্যাশা মতই ৩রা মে পর্যন্ত দেশজুড়ে লক ডাউন চলবে বলে নববর্ষের সকালে ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে ২০ এপ্রিলের পর শর্ত সাপেক্ষে সংক্রমিত এলাকা বাদে অন্যান্য এলাকায় সীমিত ছাড় দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে তার জন্য গাইড লাইন চূড়ান্ত করে দেওয়া হবে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। এই গাইড লাইন জারি করা হবে আগামী কাল। মূলত আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দিতে আগামী ২০ তারিখের পর সীমিত ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি বলে মনে করছেন অনেকে।
মোদী বলেন, আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউন আরো কড়া ভাবে যাতে পালিত সেদিকে নজর দেওয়া হবে। প্রতিটি জেলা, মহল্লায় চলবে কড়া নজরদারি। ২০ এপ্রিলের পর যে সব এলাকায় করোনার থাবা পড়বে না। সেখানে শর্ত সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় গাইড লাইন মেনে সীমিত ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মূলত দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের কথা ভেবেই কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মোদী বলেন, এই সময় রবিশস্য কাটা হয়। ফলে কৃষকদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।
মোদী বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশের তুলনায় ভারত করোনার বিরুদ্ধে অনেক ভালো লড়াই চালাচ্ছে। করোনা আটকাতে ভারতের নেওয়া দ্রুত সিদ্ধান্ত ভারতকে আজ অন্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো জায়গায় ধরে রাখতে পেরেছে।
লক ডাউনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তথা নির্ধারিত অনুশাসন পালনকারী দেশবাসীকে প্রধানমন্ত্রী আজ যোদ্ধা হিসেবে অভিহিত করে তাদের ত্যাগের প্রশংসা করেছেন ও প্রণাম জানিয়েছেন। মোদী বলেন, উৎসব মুখর ভারতে করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে মানুষ আজ অত্যন্ত সাদামাটা ভাবে উৎসব পালন করছে। করোনার মত মহামারী মোকাবিলায় সংবিধানের we the people of india – র শক্তি আজ প্রকাশিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। মোদী বলেন, লকডাউন পালনে কেউ বাড়ি থেকে অনেক দূরে আছেন। ফিরতে পারছেন না। কত গরিব মানুষ অভুক্ত থেকে যাচ্ছেন। সব রকম যাতায়াত বন্ধ। এক সংকট মোকাবিলায় মানুষ এক অনুশাসিত যোদ্ধার মত কাজ করছে। তাই এই যুদ্ধে কোনো ভাবেই যাতে আমরা হেরে না যাই তার জন্য লক ডাউন বৃদ্ধির প্রয়োজন।
মোদী বলেন, করোনা মোকাবিলায় ভারত অত্যন্ত দ্রুত ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যখন ভারতে একটাও করোনারি কেস ছিল না তখন থেকেই বিমান বন্দরে স্ক্রিনিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ভারতে যখন আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫০ তখনই দেশজুড়ে লক ডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সমস্যা বাড়ার অপেক্ষা করে নি। এর জন্য বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে ভারতকে। কিন্তু তবু ভারতবাসী প্রানে বাঁচবে।
তিনি বলেন, সারা বিশ্বে করোনা যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে তাতে আতঙ্ক বাড়ছে। তাই রাজ্য সরকার গুলির সঙ্গে আলোচনার পর লকডাউন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। লক ডাউন বাড়ানোর পক্ষে ভারতের নাগরিকরাও।
তিনি বলেন যে স্থান গুলো এখনও পর্যন্ত হটস্পট হয়ে ওঠেনি। সেগুলোকে আটকাতে হবে। যেগুলো হটস্পট হবার সম্ভাবনা রয়েছে সেগুলোতে বেশি কড়া হতে হবে। তাই ২০ এপ্রিল পর্যন্ত লক ডাউন আরও কড়া ভাবে মানতে হবে দেশবাসীকে। এরপর মূল্যায়ন হবে কোথায় কোথায় সীমিত ছাড় দেওয়া সম্ভব।
দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন করোনা লড়াইয়ের জন্য ভারত সরকার তৎপড় রয়েছেন। ইতিমধ্যেই ২২০টি ল্যাবে করোনা টেস্ট হচ্ছে। ১ লক্ষ আইসোলেশন বেডের ব্যবস্থা হয়েছে। ৬০০-র উপর করোনা হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও রেশনের ব্যবস্থাও রয়েছে দেশে। তাই দেশবাসীকে তিনি করোনার বিরুদ্ধে এই অনুশাসিত লড়াই আরোও কিছু দিন চালিয়ে যাওয়ার আবেদন করেছেন।