সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২২ মে: গলায় নাইলন দড়ির ফাঁস দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডের রায় দিল বাঁকুড়া আদালত।
সরকারি পক্ষের আইনজীবী অরুণ কুমার চ্যাটার্জি জানান, গত ২৪ মে ২০২০ স্ত্রী বৈশাখী বাউরিকে খুনের অভিযোগ ওঠে স্বামী আনন্দ বাউরির বিরুদ্ধে। অরুণবাবু জানান, এই খুনের ঘটনার আট বছর আগে মেজিয়া থানার মুকুন্দপুর গ্রামের মেয়ে বৈশাখীর সঙ্গে বেলিয়াতোড় থানার রামকানালি গ্রামের আনন্দ বাউরির বিয়ে হয়। আনন্দবাবু পেশায় শ্রমিক। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই অত্যাচার চলতেই থাকে। বৈশাখীর বাবা মারা গিয়েছিল অনেকদিন আগেই। তার মা ও ভাইয়েরা প্রতিবাদ করত। আনন্দবাবুকে তারা বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু তাতেও কোনো ফল হয়নি। গত ২৪ মে ২০২০ রাতে গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে বৈশাখীর বাপের বাড়ির লোক খবর পায় যে বৈশাখী শ্বশুরবাড়িতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে ছিল। তাকে গ্রামবাসীরা হাসপাতালে নিয়ে গেছে। তারপরেই বৈশাখীর বাপের বাড়ির লোক সেখানে গিয়ে দেখে বাড়িতে কেউ নেই। সেখান থেকে বেলিয়াতোড় গ্রামীণ হাসপাতালে যান।সেখানে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মারা গেছে। শ্বশুরবাড়ির কোনো লোক সেখানে ছিল না। ময়না তদন্তের পর বৈশাখীর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয় বেলিয়াতোড় থানায়।
ময়নাতদন্তে রিপোর্টে জানা যায় যে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলায় সরকারি পক্ষের আইনজীবী অরুণ কুমার চ্যাটার্জি জানান, কুড়িজন সাক্ষী এই মামলায় ছিল। তার স্বামীর বিরুদ্ধে ৩০২ ধারা অর্থাৎ খুনের মামলা রুজু করা হয়েছিল এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যদের ক্ষেত্রে ৪৯৮ ধারা রুজু করা হয়। বুধবার বাঁকুড়া আদালতে আনন্দ বাউরীকে দোষী সাব্যস্ত করেন অতিরিক্ত সেশন জর্জ ফোর্থ কোর্ট মৌমিতা বসু।বিচারক স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা এবং অনাদায়ে আরও ছ’ মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।