“দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে কৃতকর্ম সংরক্ষিত হোক সরকারি তত্ত্বাবধানেই”, বললেন তিন বার গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়া অনুপম সরকার

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ১৮ জুলাই:
শান্তিপুর গর্বের শহর। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বহু গুণী, কৃতী মানুষের কৃতিত্বে প্রজ্জ্বলিত হয়েছে শান্তিপুরের নাম। সেই শান্তিপুরের গর্বের মুকুটে আরও একটি পালক সংযোজন করলেন শান্তিপুরের এক কৃতী সন্তান অনুপম সরকার। পরপর তিনবার গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম তুলে শান্তিপুরকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে এলেন তিনি। পেশায় বাচিক শিল্পী হলেও বরাবরই একটু ভিন্নধর্মী কাজে আগ্রহ অনুপমের। আর এই ভিন্নধর্মী শিল্পকে ভালোবেসেই ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে পরপর তিনবার গিনেস বুকে নাম নথিভুক্ত করলেন তিনি।

২০১৮ সালে স্টেপলারের পিন দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো চেন তৈরী করেন অনুপম। অনুপম জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অর্থাৎ বিশ্বের সর্ব ধর্মের মানুষকে একসূত্রে বাঁধার বার্তা দিতেই তিনি এই চেনটি তৈরী করেন এবং প্রথমবারের জন্য গিনেসবুকে নিজের জায়গা করে নেন। ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার তিনি গিনেসবুকে নাম তোলেন আপেলের বীজ দিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ একটি মালা তৈরী করে। আপেল উপকারী ফল হলেও তার বীজ কিন্তু অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতার বার্তা দিতেই এই উদ্যোগ নেন বলে অনুপম জানিয়েছেন। ২০২০ সালেও অনুপম তৃতীয়বারের জন্য গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলেন। এবার তিনি ২ লক্ষ ২৭ হাজার ২৯০ টি দেশলাই কাঠি দিয়ে তৈরী করেন ভারতের শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিসৌধ অমর জওয়ান জ্যোতির একটি রেপ্লিকা বা প্রতিকৃতি।

এ প্রসঙ্গে অনুপম জানান, পুলওয়ামার ঘটনা তাকে খুব নাড়া দিয়েছিল। তাই ভারতীয় সেনাদেকে সম্মান জানাতেই তিনি অমর জওয়ান জ্যোতির প্রতিকৃতিটি তৈরী করেন। এই অনন্য ভাবনার বিষয়ে অনুপম জানান, যেহেতু সীমান্তে জওয়ানদের মৃত্যুর মূল কারণ গান পাউডার বা বারুদ, তাই তিনি সেনাদের সম্মান জানাতে বারুদযুক্ত দেশলাইকাঠিকেই তার শিল্পের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেন। ২০২০ সালে মনোনীত হলেও তার রেকর্ডের শংসাপত্রটি করোনা আর লকডাউনের কারণে ১১ মাস আটকে ছিল। গত ১২ জুলাই এই শংসাপত্রটি তার হাতে এসে পৌঁছায়। পরপর তিনবছর গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের এই শংসাপত্র লাভ করায় বলাই যায় তিনি হ্যাট্রিক করেছেন। ভবিষ্যতে অনুপমের আরও কৃতিত্বের সাক্ষী হওয়ার অপেক্ষায় আছেন এখন দেশবাসী। তবে তার একমাত্র ইচ্ছা, দেশের স্বার্থেই কৃতকর্ম গুলিকে সংরক্ষিত করা হোক সরকারি তত্ত্বাবধানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *