গবেষণাপত্র লেখার কৃৎকৌশলের পাঠ অভিজ্ঞ গবেষকের

অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ১৩ ডিসেম্বর: বদলে গিয়েছে, আরও বদলে যাচ্ছে গবেষণাপত্র লেখার কৃৎকৌশল। মঙ্গলবার বাবা সাহেব অম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির (বিএসএইইউ)-এর সপ্তাহব্যাপী শিক্ষাশিবিরে তারই পাঠ দিলেন অধ্যাপক (ডঃ) অসিত কুমাট দাস। শিক্ষাশিবিরটি হচ্ছে বিএসএইইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামগ্রিক তত্বাবধানে।

তিনি বলেন, “দেশে দেশে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বহুদিন ধরেই বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা হয়ে আসছে। গবেষণার শেষে উপলব্ধ ফলাফল থিসিস্ (সন্দর্ভ) আকারে প্রকাশিত হয়ে থাকে। এই থিসিসের মূল্যায়ন কৱে বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ.ডি./ ডি.এসসি. / ডি.লিট. প্রভৃতি) ডিগ্রী দিয়ে থাকে।

এই গবেষণা কারা করতে পারবে, কিভাবে করবে, কী কী করতে হবে, কত দিনে শেষ করতে হবে, কি ভাবে গবেষণা-পত্রেৱ মূল্যায়ণ করতে হবে সে বিষয়ে বিভিন্ন দেশে নির্দিষ্ট নিয়মাবলী ও আইন আছে।

ভারতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি আয়োগ, সংক্ষেপে ইউজিসি গবেষণা, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিশুদ্ধতা বজায় রাখা প্রভৃতি সংক্রান্ত আইন ও নিয়মাবলী প্রনয়ণ কৱে থাকে।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য ‘গবেষণা’র সাথে জড়িত ইউজিসি-র নির্দেশিত নিম্নলিখিত তিনটি বিধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ – ১) ২০১৬ সালে প্রকাশিত গবেষণা সংক্রন্ত নিয়মাবলী, ২) ২০১৮ সালে প্রকাশিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্তৱেৱ শিক্ষক নিয়োগের নূন্যতম যোগ্যতা সংক্রান্ত নিয়মাবলী ও ৩) ২০১৮ সালে প্রকাশিত শিক্ষা সংক্রন্ত কাজেৱ বিশুদ্ধতা রক্ষা (লেখা চুৱি প্রতিরোধ) বিষয়ক নিয়মাবলী।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুৱি আয়োগ নির্দেশিত ওই তিনটির প্রথম দুটি ৱেগুলেশন অনুসাৱে উচ্চ শিক্ষায় যুক্ত ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, শিক্ষকতায় চাকুরি-প্রার্থিদেৱ এমনকি শিক্ষকগেৱও একাধিক মৌলিক গবেষণাপত্র পিয়ার-রিভিউড পত্রিকাতে প্রকাশিত কৱতে হবেই। ওগুলিৱ ওপর নম্বর আছে।

গবেষণাপত্রগুলি যাতে মৌলিক হয়, অপৱ কোন লেখা থেকে চুৱি কৱা না হয় অর্থাৎ লেখাগুলিৱ বিশুদ্ধতা ৱক্ষা কৱতে হবেই। এই বিষয়ে ২০১৮ সালে প্রকাশিত শিক্ষা সংক্রন্ত কাজেৱ বিশুদ্ধতা রক্ষা (লেখা চুরি প্রতিৱোধ) বিষয়ক নিয়মাবলী মেনে প্রতিটি গবেষণাপত্র লিখতে হবে।”

গবেষণাপত্র লেখাৱ কৃৎকৌশল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিভিন্ন গবেষণাপত্রের প্রতিপাদ্য বিষয়গুলি বিন্যাস ও সজ্জারীতি ভিন্ন স্তর ভিত্তিক করতে হয়। লেখার কিছু বিষয়বস্তু পূর্ববর্তী গবেষণা, বই, লেখা প্রভৃতি থেকে নিতে হয়। কিন্তু কিভাবে সেগুলি নিজের লেখাৱ অন্তর্ভূক্ত কর যাবে অথচ চুরি হবে না, সেই সংক্রান্ত নিয়মাবলী ও কৃৎকৌশল সম্পর্কে অবগত করানো হয়। কারণ কোনো শিক্ষা সংক্রান্ত লেখাৱ মধ্যে ১০% এর বেশি মিল থাকলে তা গ্রহণযোগ্য নয় এবং প্রকাশযোগ্য নয় তো বটেই, অধিকন্তু শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এ ছাড়াও, গবেষণাপত্র জার্নালে প্রকাশ করার আগে লোখার কোন কোন বিষয় ও দিক কিভাবে বিবেচনা করা সে সম্পর্কিত দিকগুলি আলোচিত হয়। ওই সমস্ত মিয়মাবলী মেনে কিভাবে উন্নতমানেৱ প্রকাশযোগ্য গবেষণাপত্র লেখার পরিকল্পনা করে লেখা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা কৱা হয় শিক্ষা শিবিরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *