স্কুলের জায়গা বাণিজ্যিক হিসাবে ব্যবহারের প্রতিবাদে আন্দোলনে বামফ্রন্ট

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ২ জুলাই: স্কুলের জায়গা বাণিজ্যিক হিসাবে ব্যবহারের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামল বামপন্থী সংগঠন। অবিলম্বে স্কুলের জায়গা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দেয় তারা। প্রশাসনের নির্দেশে ইতিমধ্যে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ফের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান রামপুরহাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নুরুজাম্মান।

শতবর্ষ প্রাচীন রামপুরহাট হাইস্কুল। ওই ঐতিহ্যবাহী স্কুলের দুই দিকের প্রাচীর ভেঙ্গে দোকানঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করেছে বামপন্থী সংগঠন, বিজেপি এবং স্কুলের প্রাক্তনিরা। রামপুরহাট পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর সঞ্জীব মল্লিকের নেতৃত্বে মহকুমা শাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। তাদের দাবি, স্কুলের প্রাচীর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। সঞ্জীববাবু বলেন, “বাণিজ্যিক স্বার্থে স্কুল কর্তৃপক্ষ সব কিছু জলাঞ্জলি দিয়েছে। ক্লাস ঘরের জানালার সামনে এমনভাবে প্রাচীর তোলা হয়েছে সেখানে হাওয়া বাতাস খেলবে না। ক্লাস ঘর অন্ধকার থাকবে সব সময়। স্কুলের সভাপতির নির্দেশেই প্রধান শিক্ষক এসব করছেন। এমনকি স্কুলের একমাত্র খেলার মাঠে পরিচালন সমিতির সভাপতির
এনজিওকে মেলা বসানোর অনুমতি দেওয়া হয় প্রতি বছর। এক্ষেত্রেও স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়মকানুনের কোনও তোয়াক্কা করে না”।

স্কুলের শিক্ষিকা দেবিকা চৌধুরি বলেন, “আমি স্কুলের জায়গা বাণিজ্যিক হিসাবে ব্যবহার করার বিরুদ্ধে। আমি চাই স্কুল পুরনো জায়গাতেই প্রাচীর নির্মাণ করুক। কিন্তু স্কুলে আমাদের কথার গুরুত্ব দেওয়া হয় না”।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, “পরিচালন সমিতি এবং অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কারণ সামনের জায়গা কিছু মানুষ নোংরা করে রাখেন। তাই কয়েকজন দোকানদারকে জায়গা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই মত কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু বুধবার প্রশাসনের নির্দেশে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে চলব আমরা”। তবে মাঠে মেলা বসানো নিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, “স্কুলের উন্নয়নের স্বার্থে মেলা বসাতে দেওয়া হয়”। তবে মেলা থেকে কত আয় হয় তা বলতে পারেননি তিনি।

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র, কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলের জায়গা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা যায় না। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনও অবস্থাতেই স্কুলের জায়গায় দোকানঘর করতে পারে না। আমি কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *