আমাদের ভারত, রামপুরহাট, ৩ জানুয়ারি: মানুষ মানুষের জন্য। শুক্রবার এমনই ছবি ধরা পড়ল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনের ছাউনিতে। অসুস্থ এক আদিবাসী মহিলাকে প্রতিদিন খাওয়া দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন এক দিনমজুর। যার ঘরেই সব দিন খাবার জোটে না। তিনি যোগাচ্ছেন অন্যের খাবার।
জানা গিয়েছে, বিহারের ‘আমরা পাড়ার’ এক চল্লিশ উর্দ্ধো আদিবাসী মহিলা বছর দুয়েক ধরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীয় থেকে মৃতদের আত্মীয়রা তাকে দেখে পাশ কাটিয়ে চলে যান। কিন্তু পাশ কাটিয়ে যেতে পারেননি রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তার পাড়ার যুবক স্বপন মণ্ডল। পেশায় দিনমজুর ওই যুবক প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা ওই মহিলাকে খাবার দিয়ে যান। শুধু খাবার এনে দেওয়াই নয়, নিজে হাতে খাবারও খাইয়ে দেন তিনি। যেদিন ওই যুবক আসতে পারেন না বা দেরি হয় সেই দিনগুলিতে বাদশা শেখ মহিলার পাশে থাকেন।
কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সংসারে এক অচেনা মহিলাকে কেন খাবার দিচ্ছেন? স্বপন বলেন, “ওই মহিলা চলাফেরা করতে পারেন না। কিছুদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে হাসপাতাল থেকেও তাকে বের করে দেওয়া হয়। তারপর থেকে তার আশ্রয় হয়েছে মর্গের ছাউনিতে। হাসপাতালের মর্গে এক নিকট আত্মীয়ের মৃতদেহ নিতে এসে ওই মহিলাকে দেখতে পাই। তারপর থেকেই খাবার দিয়ে যাই। সকালে কাজে যাওয়ার আগে টিফিন দিয়ে যাই। দুপুরে ভাত দিই”।
বাদশা বলেন, “আমরা প্রায় ওকে খাবার দিয়ে যেতে দেখেছি। নিজের হাতে খাবারও খাইয়ে দেয় ওই যুবক। এখন এতটাই অসুস্থ যে মহিলা নিজের নাম ঠিকানা বলতে পারে না। তবে একসময় সে বলেছিল তার বাড়ি বিহারের আমরাপাড়া। কিন্তু পরিবারের কেউ তার খোঁজে আসেনি। ফলে এভাবেই ছাউনিতে পড়ে রয়েছে। মাঝে মধ্যে আমরাও খেতে দিই”।