সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৪ ফেব্রুয়ারি:
আদালতে দাঁড়িয়ে ৭ দিনের মধ্যেই একবালপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। শুক্রবারই চার্জশিট জমা দিয়ে সেই কথা রাখল কলকাতা পুলিশ। জমা দেওয়া চার্জশিটে ধৃত ৫ জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬-ডি, ৩৪, ৩৪২, ৩৬৬-এ, ৫০৬ ধারায় এবং পকসো আইনের ৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পর্ণশ্রী থানায় গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তার ১২ বছরের বালিকা কন্যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরেই একটি মিসিং জিডি করে ওই বালিকার খোঁজ শুরু করে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। রাতভর খুঁজেও সন্ধান পাওয়া যায়নি ওই বালিকার। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ নিখোঁজ বালিকা নিজেই নিজেই পর্ণশ্রী থানায় থানায় ফিরে এসে গোটা ঘটনাটির কথা বলে পুলিশকে। চার যুবক তাকে একবালপুরের একটি স্থানে নিয়ে নিয়ে গিয়ে মদ্যপান করিয়ে গণধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করে বালিকা। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ।
অভিযোগ পাওয়া মাত্রই শুক্রবার দুপুরে অভিযুক্তদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। এরপরই পর্ণশ্রী এবং একবালপুর এর বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে চার অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে দুজনের বাড়ি পর্ণশ্রী, বাকি দুজন একবালপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অমরজ্যোতি চৌপাল, মনোজ শর্মা, ঋত্বিক রাম এবং বিকাশ মল্লিক। ধৃতদের প্রত্যেকেরই বয়স ২১ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে বলে জানা গিয়েছে। এদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, বাড়ির চাবি দিয়ে সাহায্য করেছিল বাড়িওয়ালার ছেলে। এরপরে পুলিশ বাড়িওয়ালার ছেলেকেও গ্রেফতার করে।
সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় নিজেদের অপরাধ কবুল করেছে ৫ জন অভিযুক্তই। লালবাজার সূত্রের খবর, পর্ণশ্রী থানায় প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের হলেও ঘটনাস্থল যেহেতু একবালপুর থানা এলাকায়, তাই নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি পর্ণশ্রী থানা থেকে স্থানান্তর করা হয় একবালপুর থানায়।অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে পুলিশ। সাহায্য নেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের ফরেনসিক বিভাগেরও। এছাড়াও পরীক্ষা করা হয় ঘটনাস্থলের আশেপাশের একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ। শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় ধৃত অভিযুক্তদের এবং অভিযোগকারিণীর। সবেতেই গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি পুলিশের।