আমাদের ভারত, ৩০ আগস্ট: পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ নামক সংগঠনের ডাকা মিছিলের আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সায়নকে ছাড়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছে, শনিবার দুপুর দু’টোর মধ্যে তাকে ছাড়তে হবে।
আদালতের নির্দেশ ছাড়া তার বিরুদ্ধে কোনো কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না বলেও জানানো হয়েছে। শুক্রবার সায়নের গ্রেফতারি চ্যালেঞ্জ করে মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। শুনানিতে তাকে গ্রেফতার নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি। পরে তিনি নির্দেশ দেন, সায়নকে মুক্তি দিতে হবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া আগামী দিনে কোনো কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না সায়নের বিরুদ্ধে। শুধু এই মামলাই নয়, অন্য কোনো মামলাতেও যদি তার বিরুদ্ধে কোনো এফআইআর থাকে সে ক্ষেত্রে কোনো কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না পুলিশ। আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই মামলায় হলফনামা দেবে রাজ্য।
শুক্রবার ছাত্রনেতা সায়নের গ্রেফতারি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। আরজিকর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ কেন গ্রেপ্তার হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, আরজিকর ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি। এই ঘটনার জন্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ দায় এড়াতে পারেন না। তাকে কি হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে?
কেন সায়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য, এই ছাত্রনেতা নবান্ন অভিযানের কর্মসূচি ডাকেন, যে কর্মসূচিতে পুলিশের অনুমতি ছিল না। তারপরেও মিছিল, জমায়েত করা হয়েছে। কোনোভাবেই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল না। নবান্ন অভিযানে কয়েকটি ছবি বিচারপতির সামনে তুলে ধরেন রাজ্যের আইনজীবী। হাইকোর্টের প্রশ্ন, সায়ন কোন রাজনৈতিক দলের নেতা? ওই ছাত্র নেতাকে কিভাবে এত প্রভাবশালী বলা হচ্ছে? তিনি কি এতই জনপ্রিয় যে ডাক দিলেই হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে গেল? তার কী অতীত রয়েছে? সায়ন কি সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন?
এই মামলায় বিচারপতি সিংয়ের পর্যবেক্ষণ, আরজিকরের ঘটনায় মানুষ মর্মাহত। সায়নের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। ছাত্রনেতা প্রভাবশালী নয়। ওই ঘটনা ঘটার আগে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
কিন্তু রাজ্যের যুক্তি, নবান্ন অভিযান নিয়ে সায়ন প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। পাল্টায় বিচারপতির মন্তব্য, অনেক রাজনৈতিক নেতাও তো প্ররোচনামূলক ভাষণ দেন, তাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? এমন কোনো তথ্য নেই যে ছাত্র নেতা সরাসরি নবান্ন অভিযানের অশান্তিতে জড়িত।