সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১০ জানুয়ারি:
রাত পোহালেই শহরে পা রাখবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পুলিশের কাছে গোপন খবর রয়েছে, শহরে সিএএ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সফরে বিক্ষোভ আটকাতে এক সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে তার নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করছে কলকাতা ও বিধান নগর পুলিশ।
লালবাজার এবং বিধান নগর পুলিশ সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রীর এয়ারপোর্ট থেকে ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং পর্যন্ত আসার জন্য সাধারণ ভাবে স্থল পথকে প্রথম গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নিউটাউন হয়ে মা উড়ালপুল ধরার সম্ভাবনা। হাডকো ক্রসিং থেকে নারকেলডাঙা থেকে চিংড়িঘাটা ক্রসিং পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন একজন ডিসি এবং তাকে সহযোগিতা করবেন দু’জন এসি। তাদের সঙ্গে থাকবেন চারজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। ১৬ জন সার্জেন্ট। ১৬ জন এএসআই। ৮০ জন সশ্রস্ত্র পুলিশ। রাস্তায় থাকবেন ৪০ জন লাঠিদারী হোমগার্ড, তারা সাধারণ মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করবে। রাস্তাটিকে ৮টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে।
নারকেলডাঙা মেন রোড থেকে মা উড়ালপুল পর্যন্ত ভাগ করা হয়েছে আরও ৮টি সেক্টরে। এই আটটি সেক্টরেও থাকবেন একজন ডিসি দু’জন এসি। থাকবে চারজন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। ১৬ জন করে সার্জেন্ট এবং এএসআই। ৮০ জন সশস্ত্র এবং ৪০ জন হোমগার্ড থাকবে।
মা উড়ালপুলে দায়িত্বে থাকবেন দু’জন ডিসি। ১১৮ সশস্ত্র পুলিশ কর্মী মা উড়ালপুলে নজরদারি চালাবেন। থাকবেন ৮জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। মা উড়ালপুল থেকে ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং পর্যন্ত দায়িত্বে থাকা ডিসিকে সহযোগিতা করবেন তিনজন এসি। সঙ্গে থাকবেন ছ’জন ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। ১৩০ জন সশস্ত্র পুলিশ কর্মী।
মা উড়ালপুলের আশে পাশের ছাদ থেকে চলবে বিশেষ নজরদারি। থাকবেন বাইনোকুলারধারী এবং স্বয়ংক্রিয় রাইফেলধারী পুলিশ কর্মী।
পুরো যাত্রা পথে প্রতিটি সেক্টরে দু’টি করে মোটরসাইকেল পেট্রোল। থাকবে দুটি করে পিসিআর ভ্যান। যে কোনও জরুরি অবস্থায় যোগাযোগের কাজ করবে ভ্যানগুলি। প্রধানমন্ত্রীর জন্য আরসিটিসি হেলিপ্যাড থেকেও ওল্ড কারেন্সি পর্যন্ত চলবে নজরদারি। এয়ারপোর্ট থেকে রেস কোর্স পর্যন্ত আসার জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে হেলিকপ্টারও। এই পথের জন্য একজন অতিরিক্ত ডিসিকে রাখা হচ্ছে।
ওল্ড কারেন্সি থেকে মিলিনিয়াম পার্ক পর্যন্ত থাকবে পুলিশি ব্যবস্থা। সেখানেও থাকবেন দু’জন ডিসি। থাকবে চারজন এসি। মিলিনিয়াম পার্ক থেকে ফেয়ার্লি প্লেসের জেটি ঘাট থেকে বেলুড়মঠ যেতে পারেন প্রধান মন্ত্রী। সেই জন্য জল পথে থাকছে বিশেষ ব্যবস্থা।
প্রতিটি ঘাটে এবং জেটিতে থাকবে সশস্ত্র পুলিশি প্রহড়া। পুরো দায়িত্বে থাকবে দু’জন এসি। রিভার ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর পদমর্যাদা অফিসার বিশেষ বোটে থাকবেন। যিনি প্রধানমন্ত্রীর যাত্রার স্কট করবেন। এই বোটে থাকবে বিশেষ প্রশিক্ষিত দু’জন ডিএমজি অফিসার থাকবে। এছাড়া ডিএমজির একটি বোট থাকবে জল পথের কনভয়ে। বেলুড়মঠ থেকে রাজভবনে ফেরার পথেও থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। একজন ডিসি নেতৃত্বে থাকবেন।
১২ জানুয়ারি রবিবার রাজভবন থেকে যাওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। সেখানে পোর্টের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এনআরসি নিয়ে কেউ বিক্ষোভকারীদের কয়েকটি সংগঠন রাজভবন ঘেরাও কর্মসূচি নিয়েছে। তাই রাজভবন ঘিরে থাকছে বিশেষ নিরাপত্তা বলয়।
রবিবার রাজভবন থেকে ইন্ডোরে যাওয়ার পথে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হতে পারে। সেই জন্য আকাশবানী থেকে ইন্ডোর পর্যন্ত থাকবে শুধু পুলিশ। এই পথের দায়িত্বে থাকবেন যুগ্ম কমিশনার অপরাধদমন মুরলীধর শর্মা। সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিমান থেকে নামা থেকে ফের বিমানে ওঠার পর্যন্ত অ্যাসিড টেস্টের মুখোমুখি হতে চলেছে কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ।