পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ৩ অক্টোবর: কোলাঘাট ব্লকের জলবন্দি এলাকার জমা জল বের করার জন্য অবিলম্বে সোয়াদিঘি ও দেহাটি নিকাশী খালে জমে থাকা কচুরিপানা সহ সমস্ত রকম আবর্জনা জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার, জলবন্দি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মৌজাগুলিকে “জলবন্দি মৌজা” হিসেবে ঘোষণা করে অন্তত: আগামী দু’ মাস সরকারি সাহায্য প্রদান, বর্ষার পরই সোয়াদিঘি- দেহাটি খালের পূর্ণাঙ্গ অংশ ও টোপা-ড্রেনেজ ও জঁফুলি খালের অবশিষ্টাংশ, চাপদা-গাজই খালের নিম্নাংশ সহ কামিনা, জয়গোপাল প্রভৃতি নিকাশী খালগুলির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার, অবিলম্বে দেনান-দেহাটি জল নিকাশী প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ রূপায়ণ, ক্ষতিগ্রস্ত আমন ধান, পান, ফুল সহ সমস্ত কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে আজ সোয়াদিঘি খাল সংস্কার সমিতি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙ্গন প্রতিরোধ কমিটির কোলাঘাট ব্লক শাখার আহ্বানে তমলুকে সেচ দপ্তরের জেলা অফিসে বিক্ষোভ ডেপুটেশনের সামিল হন চার শতাধিক জলবন্দি মানুষ। সেচ দপ্তরের সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, তমলুক, পাঁশকুড়া-১ ও ২ সাব ডিভিশনের এসডিও’র কাছে তারা স্মারকলিপি জমা দেন।
অন্যদিকে সকালে কোলাঘাটের বিডিও’র কাছে বন্যা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে উপরোক্ত দাবিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয়। ডেপুটেশনের সময় বিডিও ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সেচ দপ্তরের পাঁশকুড়া-১ সাব ডিভিসনের এসডিও নাজেশ আফরোজ। আগামীকালই তমলুকের এস ডি ও (সেচ) সোয়াদিঘি খাল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। কর্মসূচির শুরুতে অফিস চত্বরে জলবন্দি মানুষজনদের ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বিক্ষোভকারীরা প্রায় ১ ঘন্টা গেট ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। পরে সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ারের হস্তক্ষেপে তমলুকের আই.সি.’র সহযোগিতায় জলবন্দী এলাকার মানুষজন অফিস চত্বরে প্রবেশ করে ডেপুটেশন দেন।
সংগঠন দুটির পক্ষে মধুসূদন বেরা ও নারায়ণ চন্দ্র নায়ক বলেন, সাম্প্রতিক নিম্নচাপজনিত প্রবল বৃষ্টি ও কংসাবতীর নদী বাঁধ ভেঙ্গে পাঁশকুড়া ব্লক এলাকা বিধ্বংসী বন্যার কবলে। কোলাঘাট ব্লক এলাকা ও বন্যার পূর্ব থেকেই নিকাশী খালগুলি মজে থাকার কারণে জলবন্দি ছিল। এরপর পাঁশকুড়া ব্লক এলাকার বন্যার জল সোয়াদিঘি খাল দিয়ে বের হওয়ার কারণে খাল পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষজন চরম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। গ্রামীণ রাস্তার অধিকাংশই জলের তলায়। এলাকার আমন ধান, ফুল, সবজি চাষ একেবারেই নষ্ট হয়েছে। অনেক পুকুর ভেসে গিয়ে মাছ বেরিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন জল জমে থাকার কারণে এলাকায় ভয়াবহ দূষণ ছড়াচ্ছে। নানা ধরনের চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। বেশ কয়েক মাস আগে থেকে নিকাশী খালগুলিতে জমে থাকা কচুরিপানা, মাছ ধরার জাল, পাটা সহ সমস্ত প্রকার আবর্জনা পরিষ্কারের দাবি জানালেও বর্ষার আগে পরিষ্কার করা হয়নি বলে সংগঠন দুটির অভিযোগ।