আমাদের ভারত, হুগলী, ১৭ নভেম্বর: মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের আদলে এবারের কার্ত্তিক পুজোর মন্ডপ তৈরি করেছেন বাঁশবেড়িয়া মিলন পল্লি নটরাজ পুজো কমিটি। ইসকনের একটি প্রতিনিধিদল বাঁশবেড়িয়ার বেলতলা ফুটবল মাঠ থেকে পায়ে হেঁটে নামসংকীর্তন করতে করতে পুজো মণ্ডপে প্রবেশ করেন। সেখানেও তাদের প্রথা মেনে চলে কীর্তন। একইভাবে পুজো উপলক্ষে আয়োজিত মঞ্চে নৃত্য পরিবেশন করেন তারা। এখানকার পুজো মন্ডপের উদ্বোধন করেন সপ্তগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন চুঁচুড়া মগড়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি দেবব্রত বিশ্বাস, পৌর প্রধান অরিজিতা শীল, বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার সিআইসি অমিত ঘোষ সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। উদ্বোধনের পর পুজোমণ্ডপটি পরিদর্শন করেন মন্ত্রী সহ অন্যান্যরা।
পরে মন্ত্রী তপন দাসগুপ্ত জানান, প্রতি বছরের মত এ বছর তারা ইসকনের মায়াপুরের নুতন মন্দিরের আদলে যে মন্ডপ তৈরি করেছেন তা অতুলনীয়। এই ধরনের মন্ডপ দুর্গা পূজোয়, কালী পুজোয় বা জগদ্ধাত্রী পুজোয় হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। সব থেকে বড় কর্মকান্ড এই পুজো কমিটির সদস্যরা করেছেন সেটা হল, নদিয়ার মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের ভক্তদের নিয়ে এসে সংকীর্তন করে এলাকার বাসিন্দাদের উৎসাহ দান। আমার মনে হয় এবারে দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসবেন।
বাঁশবেড়িয়া রথতলা ইউথ এসোসিয়েশনের জামাই কার্তিক পুজো এ বছর পঞ্চাশ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এবার তাদের থিম গ্রাম বাংলার একটি বিয়ে বাড়ি। গ্রামের পরিবেশ তুলে ধরা হয়েছে মন্ডপে। এখানে আসলে আপনি দেখতে পাবেন মাটির বাড়িতে বিয়ের আসর। প্রথমে ঢুকতে গেলে চোখে পড়বে নহবতের গেটের ওপর বসে সানাই বাজাচ্ছেন সানাই বাদকরা। পুরোহিত বসে বিয়ে দিচ্ছেন। বরযাত্রী এসে পাত পেরে খাচ্ছেন।
বাঁশবেড়িয়া বসুলেন অনির্বাণ ক্লাবের কার্তিক পুজো এবছর চুয়াল্লিশ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এবার তাদের থিম আর বিলম্ব নাই। পুকুরের উপর সুন্দর একটি মন্ডপের ভিতরে সবুজ গাছ তুলে ধরা হয়েছে। গাছ কাটলে মানুষের ক্ষতি হয়, গাছের উপকারিতা সহ গাছের ডালে কার্তিক ঠাকুরকে তুলে ধরা হয়েছে।
হুগলী জেলার বাঁশবেড়িয়াতে কার্তিক পুজো বিখ্যাত হলেও এখানে তেত্রিশ কোটি দেবতাকে আরাধনা করা হয় এই তিন দিন। তবে পুজো এখানে শুরু কার্তিক মাসের সংক্রান্তির শেষ দিন।
দালানপাড়া শিব দুর্গা বয়েজ ক্লাবের সতীর দেহ ত্যাগ পুজো পঞ্চাশ বছরে পদার্পণ করেছে। এবার তাদের থিম অয্যোধার হতে চলা রাম মন্দিরের অনুকরণে।
মূলত পুজোর দিন গুলোতে ভিড় থাকলেও শোভাযাত্রাই এখানকার বিশেষ আকর্ষণ। চন্দননগরের আলোক সজ্জা সহযোগে এই শোভাযাত্রা দেখতে বহু মানুষ আসেন বাঁশবেড়িয়ায়। পুজো উপলক্ষে পুলিশি তৎপরতাও থাকে নজরকাড়া।