আমাদের ভারত, ১ জানুয়ারি: পাক জঙ্গি গোষ্ঠীর জৈশ ই মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহার বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে খবর শোনা যাচ্ছে। পাক পাঞ্জাব শহরের ভওয়ালপুরের কাছে সোমবার ভোরে পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়। শোনা যাচ্ছে, মাসুদের গাড়ি ওই হামলার শিকার হয়েছে। আর তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়েছে ও বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এই বিস্ফোরণের খবর প্রকাশ করেছে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সোমবার ভোরে ভাওয়ালপুরের মসজিদ থেকে ফেরার পথে অজ্ঞাত পরিচয় আঁততায়ীদের নিশানায় পড়ে যায় মাসুদ। তার কনভয় লক্ষ্য করে পরপর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে একাধিক ভারত বিরোধী কাশ্মীরি এবং খালিস্তান পন্থী জঙ্গি নেতা খুন হয়েছে। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা “র” এর দিকে নিশানা করা হয়েছে। নভেম্বরে করাচিতে খুন হয়েছে জৈশ- এর প্রথম সারির নেতা মৌলানা রহিমুল্লাহ।
৯০ দশকে কাশ্মীর উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে ভারতীয় সেনার হাতে ধরা পড়েছিল মাসুদ। অটল বিহারী বাজপেয়ীর জমানায় কান্দাহার বিমান ছিনতাই কাণ্ডে জঙ্গিদের শর্ত মেনে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে। শুধু কান্দাহার বিমান ছিনতাই কাণ্ড নয়, ২০০১- এ সংসদে হামলা, ২০১৬- পাঞ্জাবের পাঠানকোটে ভারতীয় বায়ুসেনা ঘাঁটি ফিদায় হানা, ২০১৯- এর পুলওয়ামা হামলার ঘটনাতে অন্যতম অভিযুক্ত মাসুদ ও তার ভাই।
২০০১ সাল থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জে নিরাপত্তা পরিষদের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তালিকায় রয়েছে জৈশ ও লস্কর ই তৈবা। ২০১৯ থেকে মাসুদকেও জঙ্গি তকমা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান সরকারের সাহায্যে মাদকের ব্যবসা, হাওয়ালা কারবার, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্থানীয় ট্রাস্টের নামে ধারাবাহিকভাবে জেহাদের উদ্দেশ্যে টাকা তোলে জৈশ। পাক সরকারের মদতে জৈশ সেখানে জেহাদি প্রশিক্ষণ দেয় বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বেনামী হাসপাতাল চালায় তারা। এতো কিছুর মধ্যে মাসুদের মৃত্যু যে ভারতের পক্ষে স্বস্তিদায়ক সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

