Nanur, TMC, অনুব্রতকে টেক্কা দিতে নানুরে কাজলের বিজয়া সম্মেলনী শনিবার

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৮ অক্টোবর: অনুব্রত মণ্ডলের জেল মুক্তির পর চারটি সভা হয়ে গেল মুরারই এবং নলহাটির চারটি ব্লকে। কিন্তু কোনো সভাতেই দেখা মিলল না জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা কোর কমিটির সদস্য ফাইজুল হক ওরফে কাজল শেখের। উল্টে শনিবার অনুব্রতর ময়ূরেশ্বরের সভার দিনেই নানুরে পাল্টা সভা করতে চলেছে কাজল শেখ। এই আবহে শুক্রবার নলহাটির ২ নম্বর ব্লকের ভগলদিঘি মঞ্চে দাঁড়িয়ে অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে চলার বার্তা দিয়ে জল্পনাকে উস্কে দিলেন কোর কমিটির সদস্য তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী।

বীরভূমের রাজনীতিতে অনুব্রত মণ্ডল ও কাজল শেখের অহিনকুল সম্পর্ক। মুখ্যমন্ত্রীর একাধিক সভায় দাদা সাহেনওয়াজ সেখের মাধ্যমে বিবাদ মিটিয়ে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হতেই মাথা চারা দেয় কাজল শেখ। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা বলে সভাধিপতি হন। এরপরেই অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের ছেঁটে ফেলে নিজের পছন্দের কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত করেন। ফলে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিলই। অনুব্রত জেল থেকে মুক্তি পেতেই অনুব্রত গোষ্ঠী চাঙ্গা। শুক্রবার নলহাটির মঞ্চে কোর কমিটির অন্যতম সদস্য তথা দলের জেলা চেয়ারম্যান, ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু দেখা মেলেনি কাজল শেখের। উপস্থিত না হওয়ার কোনো কারণও দলকে জানাননি তিনি। ফলে এনিয়ে মঞ্চেই চাপা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল।

তাই এবার রাখঢাক না করে বিকাশ রায় চৌধুরী বলেন, “সভায় আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দ্রনাথ সিনহা, সুদীপ্ত ঘোষের মতো কোর কমিটির সদস্যরা উপস্থিত আছেন। বিভ্রান্তমূলক কিছু কিছু খবর ছড়ানো হচ্ছে। আমরা পরিস্কার ভাষায় বলি অনুব্রত মণ্ডল সভাপতি আছে। আমরা কোর কমিটিতে আছি। আমরা একসাথে অনুব্রত মণ্ডলের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। এখানে কোনো দ্বিধা সংকোচ নেই। এখানে যারা সমালোচনা করবে তারা ভুল করবে। বীরভূম জেলার এক জায়গায় প্রতিটি নেতা নেতৃত্ব আছে। আমরা অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে বিগত দিনে যেভাবে ছিলাম, আগামী দিনেও থাকব বীরভূমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, বীরভূমের সংগঠনকে মজবুত করার জন্য”।

তবে এদিনও অনুব্রত মণ্ডল এক হয়ে চলার বার্তা দেন। সেই সঙ্গে তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি এমপি, এমএলএ হবো না। আমি মানুষের সঙ্গে থাকব। জেলার উন্নয়নে কাজ করে যাব”।

এদিকে নানুরে শনিবার কাজল শেখ পাল্টা বিজয় সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন। অথচ ওই দিন অনুব্রত মণ্ডলের সভা রয়েছে ময়ূরেশ্বরের দুটি ব্লকে। এনিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এনিয়ে কাজল শেখ বলেন, “আমাদের সভায় অনুব্রত মণ্ডল সম্ভবত আসতে পারবেন না। কারণ তাঁর শরীর সঙ্গ দেবে না। তবে কোর কমিটির আরও সদস্যরা থাকবেন। দলের পক্ষ থেকে বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠানের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তাতে নানুর, লাভপুরের নাম ছিল না। পরে নতুন করে তালিকা প্রকাশ করে নাম ঢোকানো হয়েছে। এই তালিকা কারা তৈরি করেছেন বলতে পারব না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচন করেছি। কিন্তু আমি কিছুই জানলাম না। তাতে আমি বিব্রত নই। বীরভূমের দায়িত্বে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে আছেন। ফলে তিনিই সব দেখছেন।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *