সুশান্ত ঘোষ, আমাদের ভারত, উত্তর ২৪ পরগণা, ১২ ডিসেম্বর: বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের মান ভাঙাতে ঠাকুরনগরের ঠাকুর বাড়িতে বিজেপির
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ
বিজয়বর্গীয়। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার
বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে ঠাকুরবাড়িতে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন এবং তাকেআশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করেন, শান্তনুর চাহিদা পূরণ
হবে বলে আশ্বস্ত দেন।
জানা গিয়েছে, আগামী ১৯ ডিসেম্বর বনগাঁ মহকুমাতে সভা করতে পারেন অমিত শাহ। সেই দিনি ঠাকুরবাড়ি পুজো দিতেও আসার কথা। সভার আগে মঞ্চে মতুয়া বা ঠাকুরবাড়িরকে নিয়ে কোনও বিতর্ক যাতে না ওঠে এবং শান্তনু ঠাকুর যাতে সমস্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন সে কারণেই বিজয় বর্গীয় শান্তনুর সঙ্গে বৈঠক করেন।
দীর্ঘদিন ধরে শান্তনু ঠাকুর
বিজেপির কোনও কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছিলেন না।গত লোকসভা ভোট থেকে দেখা গিয়েছে যে তিনি
বিজেপির কোনও অনুষ্ঠান বাসভাতে হাজির থাকছিলেন
না।একমাত্র প্রধান মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন।তারপরে যত নেতা এসেছে কেন্দ্রীয় থেকে রাজ্য
নেতার অনুষ্ঠানেও তিনি ছিলেন না।তার ওপরে জেলা নেতা শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে
রয়েছে দ্বন্দ্ব।শঙ্করবাবুর সঙ্গে শুধু শান্তনু ঠাকুরের নয়, জেলার একটাবড় অংশের বিজেপির কর্মী
সমর্থকদের ক্ষোভ রয়েছে। এমনকি শংকরবাবুকে
সরানোর দাবিতে শান্তনুর
বাড়িতে দু-বার কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে।যদিও রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল এগুলো শান্তনু
ঠাকুরের পরিকল্পনা। দলের দৃষ্টি আকর্ষণের
জন্য করা হয়েছিল।কিন্তু শান্তনু ঠাকুর বিজেপি না ছাড়লেও, বিজেপির
সাংসদ হয়েও তিনি কোনও কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছিলেন
না।
তার ঘনিষ্ট মহল থেকে জানা গিয়েছে, এর মূল কারণ,
নাগরিকত্ব আইন কার্যকরী না হওয়ার কারণে তাঁর ক্ষোভবেড়েছে।এবং মতুয়া সম্প্রদায়ের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল নাগরিকত্ব।নাগরিকত্ব আইন পাশ হলেও এখনও
তা লাগু হয়নি। তাই শান্তনু সহ মতুয়াদের
মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছিল, কারণ এই আশাতেই মতুয়াদের একটা বড় অংশ ভোট দিয়েছিল বিজেপিকে।কিন্তু তাঁদের সেই আশা পূরণ হওয়ার আগেই মাঝপথে
আটকে যায়।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন।সেক্ষত্রে শান্তনু ঠাকুরকে যদি নির্বাচনী কাজে নামানো না যায়,
তাহলে মতুয়াদের একটা বড় অংশ বিজেপির হাত ছাড়া
হতে পারে।একমাত্র উত্তর ২৪ পরগনাতে ৩৫টি বিধানসভা কেন্দ্র। তাঁর মধ্যে প্রায় ২৯টিতেই মতুয়াদের প্রভাব রয়েছে।এছাড়া রাজ্যের অধিকাংশ জেলাতেই মতুয়াদের প্রভাব আছে। তাই এই মুহুর্তে যদি শান্তনু
ঠাকুরের মান ভাঙানো না যায় এবং তাঁর হাতে মতুয়াদের
নাগরিকত্ব দিয়ে তাঁর লড়াইকে সন্মান জানানো না হয়,
তাহলে বিজেপির মতুয়া ভোট অধরাই থেকে যাবে বলে
রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছে।সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে মতুয়া ভোট নিজেদের দিকে টানতেআজ শান্তনুর বাড়িতে এলেন বিজেপির সর্বভারতীয়
সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ
বিজয়বর্গীয়। এদিন সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে
শান্তনুর ঘরে বসে চা চক্রের
মধ্যে দিয়ে বৈঠক করে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ
সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়।যদিও তিনি মান ভাঙানোর কথা এড়িয়ে গিয়ে বলেন,
নাগরিকত্ব আগামী
জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহ বা ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নাগরিকত্ব আইন লাগু হবে।
তবে এদিন বৈঠকের শেষে শান্তনু ঠাকুর বলেন, তাঁর লড়াই মাতুয়া ও উদ্বাস্তুদের নিয়ে। তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়ার দাবি। সেই দাবি লাগু হলেই দলের সমস্ত কার্যক্রমে উপস্থিত থাকবেন।