শিক্ষক কুলের ব্যাপ্তি ঘটাল পুরুলিয়ার ‘কাব্যায়ণ’

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৫ সেপ্টেম্বর: জেলায় তো বটেই রাজ্যে এমনটা আজকের দিনে খুব একটা ঘটে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষিকারা গান, কবিতা, নাচ, বেহালা, আঁকা, তবলা প্রভৃতির ২০৩ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে এক মঞ্চে সংবর্ধনা ও সম্মাননা জানাল পুরুলিয়ার সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘কাব্যায়ণ’।

খানিকটা প্রথা ভেঙেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তারা। পুরুলিয়া শহরের হরিপদ সাহিত্য মন্দিরের প্রেক্ষাগৃহে উপচে পড়েছিল স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষীদের ভিড়ে। ৯৫ বছরের প্রবীণ শিক্ষক থেকে শুরু করে নবীন প্রজন্মের শিক্ষক যাঁরা নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষক। আশির্ধ শিক্ষক শিক্ষিকার সংখ্যা কম নয়। এঁরা সবাই শিক্ষা জগতে ছাপ রেখেছেন। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় যে পর পর দুটি প্রজন্মও একই মঞ্চে সন্মানিত হন। বাবা ছেলে দুই জনই অঙ্কন শিক্ষক। এমনই তাপস বসু মল্লিক ও তাঁর ছেলে ভাস্কর বসু মল্লিক, আশীষ নন্দী ও ছেলে আকাশ নন্দী, অনিন্দিতা ঘোষ মেয়ে দেবারতি ঘোষ দুজনই সঙ্গীত শিক্ষিকা। রবীন্দ্রনাথ সেন বাচিক শিল্পী এবং শিক্ষক, মেয়ে অনন্যা সেন নৃত্য শিক্ষিকা। সবাই এই মঞ্চেই সংবর্ধিত হলেন। এঁদের সবাই বিভিন্নভাবে সন্মানিত হয়েছেন তবে অভিনব এই মঞ্চে সংবর্ধিত হতে পেরে আপ্লুত তাঁরা।

এই উদ্যোগের ভাবনা নিয়ে সংস্থার কর্ণধার ও সদস্য ভাস্কর দাশগুপ্ত, দুর্গা চ্যাটার্জি, রাজু প্রামানিক জানান, “আমাদের সন্তানেরা কেউ গান শেখে, কেউ কবিতা শেখে, কেউ নাচ শেখে, কেউ আবৃত্তি শেখে, কেউ বেহালা, গিটার, আঁকা, বাঁশি, শেখে। যাঁরা শেখান তাঁরা প্রত্যেকেই স্ব-স্ব ক্ষেত্রে গুণী মানুষ। প্রচারের আলোর সার্চলাইট থেকে যায় শিক্ষার্থীদের ওপর। কিন্তু যাঁরা এই সমস্ত শিক্ষার্থীদের নিবিড় অনুশীলনের মধ্য দিয়ে তালিম দেন তাঁরা সচরাচর প্রদীপের আলোর বৃত্তে আসেন না। তাই এই প্রচেষ্টা।”

আশি ছুঁই ছুঁই প্রবীণ স্কুল শিক্ষক উদয় শংকর দে বলেন, “জন্মাবধি এমন অনুষ্ঠান শুনিনি। আজ চাক্ষুষ করলাম। কাব্যায়ণ পুরুলিয়া জেলার সাংস্কৃতিক জগতকে আরও উঁচুতে পৌঁছে দিল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *