জেলায় পদার্পনের ঠিক আগেই বড়জোড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনায় সৌমিত্র খাঁ

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ১৬ ফেব্রুয়ারি: জেলায় পদার্পণের ঠিক আগেই পঞ্চায়েতের দুর্নীতি ও পরিষেবা প্রদানে ব্যর্থতার প্রতিবাদে আজ বড়জোড়ায় অবস্থান ও বিক্ষোভ সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করে চাঁছাছোলা ভাষায় বক্তব্য রাখলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।

শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা করে বিভিন্ন প্রকল্পের পরিষেবা প্রদান করবেন জেলার উপভোক্তাদের। সেইসঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কয়েকটি প্রকল্পের ঘোষণা ও শিলান্যাস করবেন। ঠিক তার আগের দিন অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার উত্তর বাঁকুড়ার শিল্পাঞ্চলের বড়জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও পরিষেবা প্রদানে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ অবস্থানে বসলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এদিন সারাদিন ধরে ধর্না অবস্থানের ডাক দেয় বিজেপির বড়জোড়া মন্ডল-১ কমিটি। প্রথমে অবস্থানের অনুমতি না দিলেও শেষে সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ২ ঘন্টার অবস্থানের অনুমতি দেয় পুলিশ। এই অবস্থান মঞ্চে দাঁড়িয়ে সৌমিত্র খাঁ চাঁছাছোলা ভাষার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবারকে আক্রমণ করে বলেন, রাজ্যের একটা পরিবার চুরি করে ডাকাতি করে সর্বস্ব লুঠ করছে আর রাজ্যের মানুষকে সারা বছর মেলা খেলায় ভুলিয়ে রাখছে।

পুরির সোনার তরী হোটেলের মালিক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাকা কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও কাকীমার নামে রয়েছে বলে সৌমিত্র খাঁ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এই সম্পত্তি কোথা থেকে এলো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জবাব দিতে হবে। তার নামে মামলা করার কথা বলে তিনি বলেন, অভিষেককে, তার বউকে, শ্যালিকাকে ইডি সিবিআই ডাকছে। কেন ডাকছে সবাই জানে। তবুও রাজ্যের মানুষকে বাজাও তালি, বাজাও তালি বলে প্রতি ব্লকে একজন করে চোর তৈরি করে দিয়েছে। কোথাও বিধায়ক চোর, কোথাও পঞ্চায়েত প্রধান চোর তো কোথাও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চোর। এর জবাব অভিষেক আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিতে হবে।

দামোদর নদের পাশেই বড়জোড়ার অবস্থান তবুও এখানে পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে পারেনি তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত। তিনি খালি বালতি ও কলসি তুলে ধরে বলেন, বড়জোড়ার মা বোনেদের দূর দূর থেকে জল আনতে হচ্ছে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার নল বাহিত বিশুদ্ধ পানীয় জলের জন্য যে টাকা দিয়েছে তার পাইপ পর্যন্ত চুরি করেছে তৃণমূল নেতারা। বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখার্জির নাম না করে তিনি বলেন, এখানের বিধায়কের ব্যবহার অত্যন্ত মধুর। দেখা হলেই কাকা কেমন আছো, ভাই বাড়ির সব ভালো আছে তো ইত্যাদি বলে ভেজা বেড়ালটি সেজে থাকলেও তিনি আকন্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে আছেন। এদিন অবস্থান মঞ্চে বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ, যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ কর, মন্ডল সভাপতি গোবিন্দ ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিল্লেশ্বর সিংহ বলেন, পঞ্চায়েতে গেলে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না। প্রধান দুর্নীতিতে ডুবে আছেন এর প্রতিবাদে আমরা পঞ্চায়েতে তালা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি শোধরাননি। তাই বাধ্য হয়ে অবস্থানে বসেছি। এরপরও অবস্থার বদল না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।

এপ্রসঙ্গে বিধায়ক অলক মুখার্জি বলেন, সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের কথা যত কম বলা যায় ততই ভালো। উনি একটা পাগল। কখন কি বলেন নিজেই জানে না। আমরা যে দ্রুত গতিতে জল প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তা ওরা দেখেও দেখতে পাচ্ছেন না। জেলার মধ্যে বড়জোড়া পঞ্চায়েত খুব ভালো কাজ করছে। সে রিপোর্ট দেখে নিতে পারেন বিল্লেশ্বর বাবুরা। অলক মুখার্জি আরো বলেন, বিজেপির মত তৃণমূল দেশকে দেউলিয়া করতে চায় না। ওরা ব্যাঙ্ক বীমায় গচ্ছিত জনগনের টাকা আদানীর হাতে তুলে দিয়েছেন। তার জবাব আগে দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *