আমাদের ভারত, ১২ ফেব্রুয়ারি: খেলা হবে স্লোগান তুলে ২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার পঞ্চায়েতে তার পাল্টা গেরুয়া ঝড়ে খেলা ভোটে খেলা শেষের পাল্টা স্লোগান তুলে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। বাংলায় তিনি স্লোগান দেন, “শেষ হবে শেষ হবে কাটমানির খেলা শেষ হবে, শেষ হবে শেষ হবে সিন্ডিকেটের খেলা শেষ হবে, শেষ হবে শেষ হবে তোলাবাজির খেলা শেষ হবে।”
কাল রাজ্যে এসেছেন বিজিপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। রবিবারে রাজ্যে জোড়া সভা করেছেন তিনি। আর সেখান থেকেই পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে উৎখাত করার আহ্বান জানালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। ডাক দিলেন পরিবর্তনের। পূর্ব বর্ধমান এবং পূর্ব মেদিনীপুরে জনসভা করেছেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের হোম ওয়ার্ক সেরে রাখছে পদ্ম শিবির।সেই লক্ষ্যেই পূর্বস্থলী এবং কাঁথিতে জনসভা করেন বিজেপির সভাপতি। সূত্রের খবর, এই বৈঠকের পাশাপাশি রাজ্যের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন নাড্ডা।
এদিন পূর্বস্থলীর মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর জনসভায় যান নাড্ডা। সেখান থেকে তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি বিশ্বের সবথেকে বড় রাজনৈতিক দল। বাংলার পরিবর্তন হবেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শাসন কালে বাংলায় জঙ্গল রাজ তৈরি হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি সেই জঙ্গল রাজকে বিদায় দেবে বাংলার মানুষই। তিনি স্লোগান দেন, “মা মাটি মানুষের সরকার আর নেই দরকার।”
এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে দুবার বাংলায় এলেন নাড্ডা। তিনি বলেন, বাংলা গোটা দেশকে দিশা দেখায়, কিন্তু সেই বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। এখানে জঙ্গল রাজ চলছে। অপশাসন অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় বাংলা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুশাসনের খতিয়ানও তুলে ধরেন নাড্ডা। তিনি বলেন, দেশের যুবকরা যাতে আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেন তার জন্য মোদীজি পদক্ষেপ করেছেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টও মাস্ক পরছেন, কিন্তু জনসভায় এত লোকজন পাশাপাশি বসে রয়েছেন তবু কারো মুখে মাস্ক নেই। আর এটা সম্ভব হয়েছে কারণ মোদীজি কোটি কোটি ভ্যাকসিন ডোজ দিয়েছেন। সম্পূর্ণ টিকাকরণ করা হয়েছে দেশবাসীর।
নাড্ডা বলেন, চিন থেকে আমদানি নয় দেশেই এখন তৈরি হচ্ছে মোবাইল। কলকাতার মেট্রো প্রকল্পের জন্য এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। সুশাসনই মোদীজির লক্ষ্য। মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা মাত্র ঘন্টাখানেকের মধ্যে দেশের সেবায় যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। হাওড়া-জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন করেন।
তৃণমূলকে আক্রমণ করে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, এই সভা জনসভায় ভিড় বলে দিচ্ছে বাংলায় পরিবর্তন আসতে চলেছে। নাড্ডা বলেন, জল জীবন মিশনের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু এই রাজ্যে সেই প্রকল্প ঠিক মত করা হচ্ছে না। মোদীজির স্বপ্ন কেউ ঝুপড়িতে থাকবে না। সেই জন্য মোদীজি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা শুরু করেছেন। কিন্তু তাও বাংলা আবাস যোজনা বানিয়ে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোনো অর্থ না দিয়েই কেন্দ্রের প্রকল্প চুরি করা হচ্ছে। নাড্ডা বলেন, মোদী সরকার বাংলায় ৭৪ লাখ শৌচালায় তৈরি করেছে।
তৃণমূলকে আক্রমণ করে বিজেপি সভাপতি বলেন, তৃণমূলের টি হলো তোলাবাজ, এম হলো মাফিয়া, সি হলো করাপশন ও কমিশন।
সবার শেষে বাংলায় স্লোগান তুলে নাড্ডা বলেন, ও দিদি আপনার নাম তো মমতা আপনি কবে থেকে নির্মমতা হয়ে গেলেন।” কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা বলেন, দিদির স্লোগান এগিয়ে বাংলা, হ্যাঁ দুর্নীতিতে এগিয়ে বাংলা, তৃণমূলের অত্যাচারে এগিয়ে বাংলা। তাই দলের কর্মীদের ভোটের ময়দানে লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়ে তিনি স্লোগান দেন, “গেরুয়া ঝড় আসছে, তেড়ে ভাগ তৃণমূল বাংলা ছেড়ে।”