পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ জুন: প্রতি বছর ৩০ জুন পালিত হয় হুল দিবস। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর এবার হুল দিবসের মঞ্চকে হাতিয়ার করে ঝাঁঝালো আক্রমণ ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার। জঙ্গলমহল জুড়ে জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গড়বেতা তিন নম্বর ব্লকের চন্দ্রকোনা রোডে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার তরফে পালিত হলো হুল দিবস। এবার সেই অনুষ্ঠানকে হাতিয়ার করে পরেশ মান্ডি থেকে শুরু করে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার জাতীয় স্তরের নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্য তৃণমূল কংগ্রেসকে এক হাত নেন। তাদের তরফে দাবি করা হয়, তৃণমূল কংগ্রেসের ভুরি ভুরি দুর্নীতি আর অরাজকতা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ চলতে পারে না। আদিবাসীদের জমি জায়গা অবৈধ উপায়ে দখল করে নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই দাবি করেন পরেশ মান্ডি।
সুপ্রিয় ভট্টাচার্য নিজের মতামত জানাতে উঠে বলেন, ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার জন্য আদিবাসীদের পায়ে ধরে কান্নাকাটি করেছিলেন, বলেছিলেন কেউ বিজেপিকে আটকাতে আপনারা, কোন রকম আন্দোলন করবেন না, আমাকে নিঃস্বার্থভাবে সমর্থন করুন। আমি ক্ষমতায় থাকলে আদিবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার ও প্রয়োজনীয় দাবি আদায়ে পাশে থাকবো, কিন্তু আমাদের মোহভঙ্গ হয়েছে তিনি পাশে থাকেননি। এবার তাই উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে জোরদার আন্দোলন শুরু করবে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা। সামনের ২০২৬- এর নির্ণায়ক শক্তি হবে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা। কোনো পাল, ঘোষ, ভট্টাচার্য, বন্দ্যোপাধ্যায় কিংবা মুখোপাধ্যায় দ্বারা সরকার তৈরি হবে না। সরকার তৈরি করব আমরা।
উপস্থিত ছিলেন, ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার রাজ্য সম্পাদক পরেশ মান্ডী, জাতীয় স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং ঝাড়খণ্ডের পরিবহন মন্ত্রী দীপক বিরুহা আদিবাসী জনজাতিদের অধিকার রক্ষা নিয়ে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার তরফে লড়াইয়ের আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা বিধু মুর্মু জানান, আদিবাসীদের যেসব জমি দখল হচ্ছে, বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এবং বেআইনিভাবে কাস্ট সার্টিফিকেট তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে জোরদার আন্দোলন শুরু হবে। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে চোখে চোখ রেখে তৃণমূল ও বিজেপির সাথে লড়াই করার সময় এসে গেছে আদিবাসীদের অধিকার নিজেদের বুঝে নিতে হবে।
সেই সাথে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চার তরফে ১৯৯৯ সালে চন্দ্রকোনা রোডে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক একটি ঘটনার জন্য নিন্দা ও শোক পালন করা হয়, এবং সফলভাবে ১৭১তম মহান হুল দিবসে সকলকে সামিল হতে আহ্বান জানানো হয়।