পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ১৮ জুলাই: চুরি হয়ে যাওয়া ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দিল পুলিশ। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের উদ্যোগে ‘প্রত্যার্পণ’ কর্মসূচির মাধ্যমে চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া ৪০৮টি মোবাইল উদ্ধার করে ফোনের প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া হলো। উদ্ধার করা ৪০৮টি মোবাইল ফোনের বাজার মূল্য ৫২ লক্ষ ১২ হাজার টাকা। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা জেলা পুলিশের সভাগৃহে মোবাইলগুলি প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেন।
ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা ২০১৯ সালে এই কর্মসূচি প্রথম শুরু করেন। তারপর থেকে প্রতি বছরই হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার মিলিয়ে মোট ৬ দফায় মোবাইল ফেরত দেওয়া হয়েছিল। ৬ দফায় মোট ২৫০৬টি মোবাইল উদ্ধার করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। যার বাজার মূল্য ২কোটি ৮৫লক্ষ ৮৫হাজার টাকা। ২০১৯ সালে ৫৮০টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ৬০লক্ষ ৭৫হাজার টাকা। ২০২০ সালে ২০১টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ২১লক্ষ ৫হাজার টাকা। ২০২১ সালে ৬৩৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ৬৯লক্ষ ৩৫হাজার টাকা। ২০২২ সালে ৫০৩টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ৫৯লক্ষ ৯০০টাকা। এবছর মার্চ মাসে ১৮০টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়, যার বাজার মূল্য ছিল ২৩লক্ষ ৪০০টাকা। মঙ্গলবার ৪০৮টি মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন পেয়ে খুশি মোবাইল ফোনের মালিকরা।
সিজুয়া গ্রামের বাসিন্দা চুনারাম হেমব্রম বলেন, “ফেকো হাট থেকে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় হারিয়ে গেছিল মোবাইলটি। প্রায় এক বছর পর পুলিশের জন্য ফিরে পেলাম। খুবই ভালো লাগছে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।”
ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিনহা বলেন, “২০১৯ সাল থেকে প্রত্যার্পণ কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া বা চুরি হয়ে যাওয়া মোবাইলগুলিকে উদ্ধার করে তার প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই দিন ৪০৮টি মোবাইল ফোন তাদের প্রকৃত মালিকদের হাতে তুলে দেওয়া হল”। এছাড়াও পুলিশ সুপার উপস্থিত সকলকে সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সচেতন করেন এবং ফোনগুলিকে সুরক্ষিত রাখার আরজি জানান।
প্রত্যার্পন কর্মসূচি ছাড়াও জেলা পুলিশের উদ্যোগে দান অ্যাপের মাধ্যমে মুমূর্ষু রোগীকে রক্তদানের ব্যবস্থা রয়েছে। যাদের রক্তের প্রয়োজন তারা এই অ্যাপে জানালে সেখানে গিয়েই পুলিশ কর্মীরা রক্ত দিয়ে রোগীর প্রাণ বাঁচান। যে সমস্ত পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা রক্তদান করেছিলেন তাদেরকেও সংবর্ধনা জানানো হয় এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এছাড়াও লালগড়ের একটি ফুটবল টিমকে খেলার সামগ্রী তুলে দেন পুলিশ সুপার।