এতদিনের সন্দেহ সত্যি হলো! রাজ্যে মাদ্রাসার আড়ালে চলে জেহাদি কান্ড,স্বীকার করল ধৃত জঙ্গি

আমাদের ভারত, ২৮ সেপ্টেম্বর: দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি বার বার বলে এসেছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা মাদ্রাসার আড়ালে চলে জঙ্গি তৈরির পাঠশালা। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যের গলাতেও একসময় এই আশঙ্কার কথা শোনা গিয়েছিল। এবার সেই অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলো। শুক্রবার মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত আল কায়েদার জঙ্গি জেরার মুখে স্বীকার করেছে, ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের মাদ্রাসায় জেহাদি কর্মকান্ডের পাঠ দান করা হয়। আর তাতে সে নিজেও যুক্ত ছিল।

এনআইএ আগেই সন্দেহ করেছিল, মাদ্রাসার আড়ালে চলে জিহাদি কর্মকাণ্ড। সেই মত ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের গজিয়ে ওঠা মাদ্রাসার উপর তাদের নজর ছিল। মুর্শিদাবাদ ও কেরালা এর্নাকুলাম থেকে আগেই ৯ জন আল-কায়েদা জঙ্গি ধরা পড়েছে। ১০ নম্বর জঙ্গিও এনআইএর জালে ধরা পড়ে শুক্রবার। মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি থেকে শামিম আনসারি নামে এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করার পর, এই বিস্ফোরক তথ্যের প্রমাণ পেয়েছে এনআইএ। জানা গেছে, জেরার মুখে সে স্বীকার করেছে মাদ্রাসার আড়ালে জেহাদি কর্মকান্ড চলে।

জলঙ্গী থানার নওদাপাড়া গ্রাম থেকে আনসারিকে আটক করা হয়। এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশের এসটিএস যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। নাইতদন্ত চলাকালীন আগেই ধৃত জঙ্গী আনসারিকে জেরা করে এনআইএ কর্তারা জানতে পেরেছে মাদ্রাসার আড়ালে সবরকম জেহাদি কাণ্ড কারখানা চলে। আল মামুনের ঘনিষ্ঠ ছিল এই আনসারি। মাঝে মধ্যে সে আল মামুনের মাদ্রাসায় গিয়ে জেহাদি কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতো বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। তারা আরো জানতে পেরেছেন শামিম আনসারির কোড ছিল মুন্না। আল-কায়েদা স্লিপার সেলের সদস্য ছিল সে। মূলত ১৮-২০ বছর বয়সের যুবকদের সে টার্গেট করতো। মাদ্রাসায় পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের জেহাদের পাঠ পড়িয়ে দলে টানার ছিল অন্যতম লক্ষ্য।

এছাড়াও বেশকিছু জঙ্গিকে বাংলাদেশের বর্ডার পার করতেও সাহায্য করত আনসারি। হ্যান্ডেলার হিসেবেও কাজ করেছে সে। সূত্রের খবর এনআইএর হাতে ধরা পড়া বাকি জঙ্গিদের সঙ্গে আনসারিকে বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। এরপর তাকে তোলা হবে দিল্লির এনআইএ আদালতে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, “রাজ্যে অনুমোদনহীন খারেজি মাদ্রাসাগুলি সন্ত্রাসবাদীদের আখড়া” বামেরা ক্ষমতায় থাকার সময় এই মন্তব্য করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও। বিষয়টি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এল কে আদবানীকেও জানিয়েছিলেন। বর্তমানে রাজ্যে একের পর এক আল-কায়েদা জঙ্গি ধরা পড়ার পর, জেহাদি কার্যকলাপের সাথে মাদ্রাসার যোগসূত্র উঠে আসতে শুরু করায় বেড়েছে উদ্বেগ। এখনো পর্যন্ত যে তথ্য হাতে এসেছে তাতে মাদ্রাসা গুলো জঙ্গি তৎপরতার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে সামনে উঠে আসতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *