আমাদের ভারত,আলিপুরদুয়ার, ৬ নভেম্বর: লকডাউনে প্রায় ৯ মাস পর কিছুটা হলে চেনা ছন্দে দেখা গেল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র জয়েন্তী। কোভিড পরিস্থিতি পার করে আনলক পর্বে প্রায় স্বাভাবিক হবার পথে জয়েন্তী বনবস্তি। লজ-হোমস্টে-রিসর্টগুলির সিংহভাগই ভরে রয়েছে পর্যটক।শুধু জয়ন্তী নয় উত্তরবঙ্গের প্রায় পর্যটনকেন্দ্রগুলি থেকেই একইরকম চিত্র ফুটে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই কোভিড পরিস্থিতির পর পর্যটকের দেখা মেলায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছে পর্যটন ব্যবসার সাথে যুক্ত সকলস্তরের মানুষরা।
জানা গেছে, দুর্গাপূজার ঠিক আগে থেকে পর্যটকদের আসা শুরু হয়েছিল। পুজোর মধ্যে এবং পুজোর পরে এদিন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, প্রায় প্রতিদিন স্থানীয় ও বহিরাগত পর্যটকরা আসছেন। কালিপুজো পর্যন্ত যথেষ্ট বুকিং রয়েছে। কালিপুজোর পর ডিসেম্বর থেকে মার্চ অবদি চেনা ছন্দে থাকলে নিজেদের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবেন লজ, হোমস্টে, রিসর্ট মালিক সহ গাইড, জিপ সাফারির সঙ্গে জড়িতরা।
উল্লেখ্য, কোভিড পরিস্থিতিতে পর্যটনের উপর বড়সড় আঘাত নেমেছে। তবে জয়েন্তীর আকর্ষণই মানুষকে টেনে আনছে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি থেকেই বেশি করে মানুষ আসছেন। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গ থেকেও ছুটি উপভোগ করতে ছুটে আসছেন অনেকে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী সবকটি ট্রেন চালু হলে পর্যটকদের সংখ্যা আর বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। জয়েন্তীর স্থানীয় গাইড অজয় শর্মা বলেন, প্রতিদিন জিপ সাফারি চলছে। নির্দিষ্ট রুটে নির্দিষ্ট সংখ্যায় পর্যটকদের নিয়ে জঙ্গলে গাড়ি ঘুরে বেরাচ্ছে। পর্যটকদের কাছে জিপ সাফারির যথেষ্ট আকর্ষণ রয়েছে।” এদিকে,স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোভিড পরিস্থিতি পার করে প্রায় ৭ মাস পর জঙ্গলে মানুষ এসেছে। বন্যপ্রাণীদের বিশেষ করে হাতি, বাইসন(গাউর), সম্বর সহ বিভিন্ন ধরনের হরিণ দেখা যাচ্ছে।যেহেতু শীত প্রায় চলেই এসেছে, বিভিন্ন ধরনের পাখির দেখা মিলছে।
আলিপুরদুয়ার ডিস্ট্রিক্ট ট্যুরিজম এসোশিয়েসন অন্যতম বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, এটা খুবই ভাল লক্ষ্মণ যে ভয় কাটিয়ে মানুষ বেড়াতে আসছেন। আমরা সকল পর্যটকদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আলিপুরদুয়ারে। আমরাও রীতিমতো সতর্ক হয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এগোচ্ছি। আশা করছি যেভাবে মানুষ আসছেন তাতে বড়দিনের ছুটিতে আরও বেশি মানুষ আসবেন বক্সা, চিলাপাতা, জলদাপাড়ায়।” উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে জয়েন্তীতে বনদপ্তরের বাংলোতে বুকিং বন্ধ। তবে ছোট ছোট প্রায় ৩৫টি লজ, হোমস্টের বেশিভাগেরই কোনও ঘরই ফাঁকা নেই। খাবারের যে হোটেলগুলি কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছিল তারাও যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে ফের মানুষের রসনা তৃপ্তি করছেন।
কলকাতা থেকে আসা এক পর্যটক অজয় চক্রবর্তী বলেন, “সুয়োগ পেলেই জয়েন্তী ছুটে আসি। বন্যপ্রাণী দেখতে নয়, প্রকৃতিকে দেখতে।” উত্তরবঙ্গে পর্যটন মহলে পরিচিত রাজ বসু বলেন,”আমরা যথেষ্ট আশাবাদী। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে খুব দ্রুত উত্তরবঙ্গে পর্যটন ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াবে। তবে ট্রেন চলাচল সবার আগে স্বাভাবিক হতে হবে।”