“জল মানে জলই, পানি নয়”— সৌরভ হালদার, অধ্যাপক, গবেষক ও গীতিকার

আমাদের ভারত, ২৬ ফেব্রুয়ারি: শুভাপ্রসন্নের মন্তব্যের পর কিছুটা সময় গড়িয়ে গেলেও জল না পানি— বিতর্ক চলছেই। কোনও ভাবে জলকে পানি বলতে রাজি নন অধ্যাপক, গবেষক ও গীতিকার সৌরভ হালদার।

সৌরভ রবিবার এই প্রতিবেদককে বলেন, ”একদা বৃহত্তর বঙ্গ ছিলো মধ্যমণি, পশ্চিমে ভাগীরথী – পূর্বে ব্রহ্মপুত্র নদ ও মেঘনা, উত্তরে পদ্মা ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। দুই বঙ্গে আটপৌরে বাঙালির দ্বন্দ্ব “জল মানে কি জল না পানিও বটে”। আসলে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দ ভান্ডার পূর্ণ ছিলো প্রাকৃত ভাষার শব্দ ভান্ডারে। আর্যদের সংস্কৃত ভাষা, দীর্ঘ মুসলিম শাসনে আরবী, ফারসি, তুর্কি শব্দ কিংবা চীনা, জাপানী, বার্মিজ ভাষা থেকে ইউরোপীয় ভাষার আলিঙ্গন বাংলা শব্দকোষকে ফুলে ফেঁপে কলেবরে বাড়তে সাহায্য করেছে।

এবার প্রশ্ন যে রোজনামচা বাঙালি, অভিজাত বাঙালি, আটপৌরে বাঙালি এই অন্য ভাষার প্রভাবকে সাদরে মেনে নিয়েছে, না নিতে বাধ্য হচ্ছে, না বহমান সংস্কৃতির মোড়কে বাহ্যিক তাল মেলানোর চেষ্টা! পশ্চিমবঙ্গে “জল” মানে জলই কিন্তু অধুনা বাংলাদেশে হিন্দি শব্দ কোষ থেকে আগত “পানি” অধিক প্রচলন ধর্মীয় প্রভাবকে উস্কে দিলেও প্রকৃতপক্ষে দুই বঙ্গের ভাষা সংস্কৃতির ভিন্নতাকে উস্কে দেয়। পানি, দোয়া, দাওয়াত বাংলা শব্দ ভান্ডারের স্থূলতা বৃদ্ধি করলেও পশ্চিবঙ্গে জল মানে জল, পানি যেন নৈব নৈব চ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *