Rajnath, BJP, “এটা কেবল ট্রেলার ছিল, সময় হলে পুরো ছবি দেখানো হবে,” অপারেশন সিঁদুর নিয়ে পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে হুঙ্কার রাজনাথের, তাহলে কি আরো বড় কিছু হবে?

আমাদের ভারত, ১৬ মে: পেহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের জঙ্গিবাদের মুখোশ খুলে দিয়েছে ভারত। দেশের মেয়েদের সিঁদুরে হাত পড়লে তার পরিণতি কী হয় তা অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে বিশ্বকে দেখিয়েছে ভারত। একরাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। নিকেশ করা হয়েছে ১০০-রও বেশি জঙ্গিকে। কিন্তু এটা তো কিছুই নয়, এটা ছিল কেবল একটা ট্রেলার। অপারেশন সিঁদুর আপাতত স্থগিত হয়েছে‌। সময় এলে পুরো সিনেমা দেখানো হবে বিশ্বকে। শুক্রবার গুজরাটের ভুজের এয়ারবেসে দাঁড়িয়ে পাকিস্থানকে এভাবেই হুঙ্কার দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং।

রাজনাথের এই হুঙ্কার ঘিরেই তৈরি হয়েছে চূড়ান্ত জল্পনা। তাহলে কি আরো বড় পদক্ষেপ করার দিকে এগোচ্ছে নয়া দিল্লি? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগাঁও-এর বৈসারন উপত্যকায় হিন্দু পর্যটকদের বেছে বেছে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। ধর্মীয় পরিচয় জেনে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল ২৫ হিন্দু পুরুষ পর্যটককে। তাদের বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ যায় এক কাশ্মীর যুবকের। নিহতদের স্ত্রীদের জঙ্গিরা বলেছিল যাও গিয়ে মোদীকে বলো।

এই হামলার পর ১৫ দিনের মাথায় সন্ত্রাসবাদীদের মোক্ষম জবাব দেয় মোদী নেতৃত্বাধীন ভারত। ৬ মে রাতে জঙ্গিদের আঁতুরঘর পাকিস্থানে আঘাত হানে ভারতীয় সেনা। পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে পুরোপুরি ব্যর্থ হয় পাকিস্তান। তাদের কয়েকশো ড্রোন হামলা প্রতিহত করে দেয় ভারতে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

ভারতের মারে বিধ্বস্ত হওয়ার পর আক্রমণ থামানোর আর্জি জানিয়েছিল পাকিস্তান। তারপর সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে ইসলামাবাদের মিনতিতে সাড়া দেয় দিল্লি। ১০ মে যুদ্ধ বিরতিতে সম্মতি জানানো হয়।

১২ মে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার সময় মোদী জানিয়ে দেন, পাকিস্তান ভারতের ক্ষমতা টের পাওয়ায় হামলা থামানোর আর্জি জানিয়েছিল। ওরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নিজেদের এই কর্মকান্ড বন্ধ রাখবে। কিন্তু এরপরেও সন্ত্রাসবাদীর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে। আমরা আপাতত এই অভিযান স্থগিত রেখেছি।

আজ মোদীর সে কথা আবারও মনে করিয়ে দিলেন রাজনাথ সিং। ভারত কী কী করতে পারে অপারেশন সিঁদুর কেবলমাত্র তার একটা ট্রেলার। অভিযান বন্ধ হয়ে যায়নি। সঠিক সময়ে এলে আমরা বিশ্বকে গোটা সিনেমা দেখাবো। পাকিস্তান যদি ফের উস্কানিমূলক কোনো কাজ করে তাহলে কঠোরতম শাস্তি পাবে। আমরা সর্বদা পাকিস্তানকে নজরে রাখছি। যদি ওরা নিজেদের স্বভাব বদলায় তাহলে ভালো, না হলে ভয়ঙ্কর ফলে ভুগতে হবে।

ভারতের শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্রের ভান্ডার নিয়ে পাকিস্তানকে সাবধান করে রাজনাথ বলেন, ব্রহ্মোসের ক্ষমতা বুঝে গেছে পাকিস্তান। আমাদের দেশে একটা কথা খুব বলা হয়, দিনে তারা দেখিয়ে দেওয়া। ভারতের তৈরি ব্রহ্মোস মিসাইল পাকিস্তানকে রাতের অন্ধকারে দিনের আলো দেখিয়ে দিয়েছে। অপারেশন সিঁদুরে ভারতের জাওয়ানরা যে শক্তি ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন আজ ভুজ এয়ারবেসে এসে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন রাজনাথ সিং।ভারতের অভিযানে বাহওয়াবাল পুরের জৈশ- ই- মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কার- ই- তৈইবা, হিজবুল মুজাহিদিনদের সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে হয়েছে জৈশ প্রধান মাসুদ আজাহারের পরিবারের ১৪ সদস্য। কিন্তু এটাই শেষ নয়, সে কথা আজ আবারও বুঝিয়ে দিলেন রাজনাথ। পাকিস্তানের প্রত্যেকটা গতিবিধির উপরে নজর রয়েছে ভারতের, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে রাজনাথ সিং- এর কথায়। বিন্দু মাত্র উস্কানিমূলক কিছু ঘটলেই প্রত্যাঘাত করবে ভারত তা স্পষ্ট হয়ে গেছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর আজকের বক্তব্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *