অভিযুক্তদের এখনই স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করা জরুরি— শ্রুতিনাথ প্রহরাজ

অশোক সেনগুপ্ত
আমাদের ভারত, কলকাতা, ১৪ মে: হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি-র গ্রুপ সি নিয়োগ সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করেছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটি। এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের এখনই স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করার দাবি তুললেন অভিজ্ঞ বাম শিক্ষকনেতা।

পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজ শনিবার এই প্রতিবেদককে বলেন, “প্রাথমিকে প্যানেলে নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাননি ৬৫০০ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী। উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা চলছে। শিক্ষা কর্মীদের গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি পদে বেআইনি নিয়োগের জেরে ৫৪২ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বেনজির দুর্নীতি ধরা পড়েছে। এর জন্য উচ্চ আদালতে রাজ্য সরকার বারংবার তিরস্কৃত হয়েছে।

আসলে, এরাজ্যে এখন সরকারির স্তরে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিকতার চেহারা পেয়েছে। শাসকদলের নেতা মন্ত্রী সহ স্তাবক প্রশাসক/আমলাদের একটা অংশ এই কাজে যুক্ত। সেই কারণে, গ্রুপ সি তে পরীক্ষা না দিয়েও চাকরি পেয়েছে ২২২জন, অথচ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্যানেলে নাম আছে এমন যোগ্য প্রার্থীরা দিনের-পর-দিন বঞ্চিত হচ্ছেন, পথে নেমে অনশন আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন l

এই সব নিয়োগের আড়ালে কত লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে বা এখনও হচ্ছে, তা আমাদের জানা নেই। রাজ্যের এক মন্ত্রীর কন্যা তাই প্যানেলের একদম শেষে নাম থাকা সত্ত্বেও শুরুতে নিয়ে আসা হয়েছে। মেধা বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি পিএইচডির ইন্টারভিউতেও মন্ত্রী তাকে পাহারা দেন, নাম বাদ দেওয়ার সাহস যাতে কেউ না দেখায়। আমার মনে হয়, হাইকোর্ট নিযুক্ত তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের যে তালিকা আদালতে পেশ করেছে তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। শুধু কান ধরলে হবে না, মাথাকেও টেনে সামনে আনা করা দরকার। শুধু এফআইআর নয়, দিনের পর দিন যারা এ রাজ্যের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দরকার।

অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কেউ কেউ আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা পর্ষদের সভাপতির মত গুরুত্বপূর্ণ পদ আঁকড়ে বসে আছেন। এরা কোনভাবেই যাতে এই তদন্ত প্রক্রিয়া কে প্রভাবিত করতে না পারেন, তাই এদের প্রত্যেককেই এখনই স্ব স্ব পদ থেকে অপসারণ করা জরুরি। একই সাথে হাইকোর্টের নজরদারিতে বঞ্চিত মেধাবী প্রার্থীরা যাতে ন্যায়বিচার পান তাও সুনিশ্চিত করা দরকার।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *