কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৭ আগস্ট: ছোটবেলা থেকে শুনছি ঘাটালে প্রতিবছর বন্যা হয়। সরকার বদল হল, মমতা ব্যানার্জি দুবার মুখ্যমন্ত্রী হলেন। প্রতিবছর সরকার কেন্দ্রকে দায়ী করে বিবৃতি দেয়। রাজ্য কবে দায় নেবে? শনিবার ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে এসে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমনই মন্তব্য করেন।
এদিন দিলীপবাবু শুক চন্দপুর, অজববনগর সহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন এবং জলবন্দি মানুষদের হাতে সাহায্য তুলে দেন। দিলীপবাবু বলেন, এখানে সবকিছু নিয়ে রাজনীতি হয়। জল ছাড়ার জন্য ডিভিসির ওপর রাজ্য সরকারের দোষারোপ নিয়ে দিলীপ বাবু বলেন, ডিভিসি রাজ্য সরকারের সাথে কথা বলে জল ছাড়ে। যখন সামলাতে পারবেন না তখন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেবে, এই হল মমতা ব্যানার্জি।
দিলীপবাবু কটাক্ষ করে বলেন, দিদি যখন দিল্লি গিয়েছিলেন সেই সময়ে বন্যায় ভেসে গেল। দিদির প্রধানমন্ত্রী না হওয়াই ভাল। সব পুকুর গায়েব হয়ে যাচ্ছে। দিদিমণির ভাইরা, লোকেরা পুকুর গায়েব করে বিল্ডিং তুলছে, কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছে। গ্রামেও পুকুর ভরাট হচ্ছে। দিদিমণি নতুন বালি নীতি করেছেন, সেখান থেকেও কাটমানি নেবেন। এরপর পুকুর নীতি করবেন।
বন্যা পরিদর্শনে এসে ঘাটালের সাংসদ দীপক অধিকারী তথা দেব বলেছিলেন, মমতা ব্যানার্জি প্রধানমন্ত্রী হলে ঘাটালে মাস্টার প্ল্যান হবে। সেই প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর কটাক্ষ, জানি না বেঁচে থাকবো কি না। দিদি প্রধানমন্ত্রী হবেন, আর এখানের দুঃখ দূর হবে। মুখ্যমন্ত্রী বন্যা পরিদর্শন করেছেন, হেলিকপ্টার চলেনি বলে জলে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। আবার আসবেন কিন্তু সাধারণ মানুষের পরিবর্তন কবে হবে। প্রশ্ন করেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন, আমরা কেন্দ্রের সাথে কথা বলতে রাজি কিন্তু রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।
ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারাদেশে ভ্যাকসিন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সমস্যাটা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। টিএমসি না করলে ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না, পার্টি অফিসে ভ্যাকসিন জমা থাকে। গত জুলাই মাসের অর্ধেক পর্যন্ত ৩ কোটি ১৪ লাখ ভ্যাকসিন পশ্চিমবঙ্গে এসেছে তিনি প্রশ্ন করেন এখানে কত লোক ভ্যাকসিন পেয়েছে? টিএমসি না করলে ভ্যাকসিন পাবে না, ত্রাণ পাবে না, লোন পাবে না। রোজ দু’জন তিনজন করে মন্ত্রী আসছেন, ঘুরছেন অথচ মানুষ ত্রাণ পাচ্ছে না। আমাদের পার্টির কার্যকর্তারা যা জোগাড় করছেন, তা আমরা মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছি।
সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রিপুরা সফর নিয়ে তিনি বলেন, ত্রিপুরাতে অভিষেকের গাড়ির উপর কেউ হামলা করেনি। বিজেপির মিছিলে উনি গাড়ি ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। তাই লোকেরা ওর বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছিল। টিএমসির ওখানে জায়গা নেই। পার্টিটা উঠে গেছে। তাই জায়গা খোঁজার জন্য এসব নাটক করছে। ত্রিপুরায় গিয়ে ওরা মনে করছে জিতে যাবে। তাই গেছেন। টিএমসি মারপিটের রাজনীতি করে। তারা যেখানে যায় লোকে শঙ্কিত হয় যে খুনখারাপি শুরু হবে। ওদের মারার কোনও প্রয়োজন নেই ত্রিপুরাতে।
এদিন দিলীপবাবুর সাথে ছিলেন বিধায়ক শীতল কপাট, দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক রাম কুমার দে অভিজিৎ অধিকারী, তপন দত্ত সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।