চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় কি বিজেপি মুখি?

নীল বণিক, আমাদের ভারত, কলকাতা, ৯ ফেব্রুয়ারি:
চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় কি এবার বিজেপি মুখি? শনিবার কলকাতার জ্ঞান মঞ্চে আরএসএস এর সম মনোভাবাপন্ন সংগঠন সীমান্ত চেতনা মঞ্চের এক অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে এমন জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। কারণ ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আরএসএসের তাবড়-তাবড় কার্যকর্তা।

প্রসঙ্গত, সাংবাদিক সুমন চট্টোপাধ্যায় একটি চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত হয়ে সিবিআই’র হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ওড়িশাতে সংশোধনাগারে ছিলেন। এরপর এই মামলায় বর্তমানে তিনি সংশোধনাগারের বাইরে রয়েছেন। এহেন একজন অভিযুক্ত কিভাবে সংঘের সম মনোভাবাপন্ন সংগঠনে আমন্ত্রণ পেলেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরে বিতর্ক।

শনিবার জ্ঞানমনঞ্চে পশ্চিমবাংলার সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়। আয়োজক ছিল আরএসএস এর সম মনোভাবাপন্ন সংগঠন সীমান্ত চেতনা মঞ্চ। এই সংগঠনের রাজ্যের দায়িত্বে রয়েছেন সদ্যপ্রাক্তন বিজেপি নেতা সুব্রত চ্যাটার্জি। তবে, দায়িত্ব ঘোষণা হলেও সুব্রতবাবু এখনও এই সংগঠনের দায়িত্ব বুঝে নেননি। সেই সংগঠনের মঞ্চে সংঘের ক্ষেত্রীয় প্রচারক প্রদীপ জোশি সহ সংঘ নেতা অঞ্জুলা বিনয়কিয়া হাজির ছিলেন। হাজির ছিলেন রাজ্যের সংঘের কার্যবাহ(সম্পাদক) ডক্টর জিষ্ণু বসু। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিপদ নিয়ে সেই সভায় বক্তব্যও রাখেন সুমন চট্টোপাধ্যায়।

ওই অনুষ্ঠানের পর রাজ্য বিজেপিতে জোরদার আলোচনা শুরু হয়েছে। তাহলে, সুমন চট্টোপাধ্যায় কি আগামীদিনে বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। পাশাপাশি, তাঁর অতীতের কর্মকাণ্ড নিয়েও আলোচনা চলছে। রাজ্য বিজেপির নেতারা দলের মধ্যে বলাবলি করছেন, সুমন চট্টপাধ্যায় সাংবাদিক জীবনে প্রণব মুখার্জির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন। অতি ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে। ঘনিষ্ঠতা ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। কিন্তুু কোনদিনও কোনও রাজ্য বিজেপি নেতার ছায়া মারাতে দেখা যায়নি সুমন চট্টোপাধ্যায়কে। টেলিভিশনের পর্দাতে বসে বা তাঁর লেখনীতে সব সময় আরএসএসকে কটাক্ষ করতেন বলে অভিযোগ রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশের। দলের মধ্যে আদি বিজেপপন্থী নেতারা বলাবলি করছেন মুকুল রায়কে দলে নেবার পর এমনিতেই বিজেপি সম্পর্কে জনমানষের প্রশ্ন উঠেছে। সারদা কাণ্ড নিয়ে সেভাবে মানুষের মধ্যে আর যাওয়া যাচ্ছে না, বলে মত বিজেপি নেতাদের একাংশের। তারপরে যদি সুমন চট্টপাধ্যায়ের মতো অভিযুক্তরা সংঘের সম মনোভাবাপন্ন সংগঠনে আসেন তাহলে মানুষের প্রশ্নের মুখে ফের পড়তে হবে তাঁদের। তবে, সুমন চট্টোপাধ্যায়ের সমালোচনা করলেও তাঁর লেখনীর প্রশংসাও করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *