আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ২০ ফেব্রুয়ারি: মমতার হাত ধরে বিপ্লবের ঘাসফুলে ফেরার জল্পনায় গোটা দক্ষিন দিনাজপুর। ৪ মার্চ বুনিয়াদপুর ফুটবল মাঠে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলীয় সভাকে ঘিরেই উস্কে উঠেছে সেই জল্পনা। যে জল্পনায় ইতিমধ্যে প্রধান চর্চার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে জেলাজুড়ে। শুধুমাত্র চা বা পানের দোকানেই নয়, দলের প্রথম সারির নেতৃত্বদের একাংশের মুখেও উঠে এসেছে এমন জল্পনায় বিষয়। আর যাকে ঘিরে কিছুটা শঙ্কিত হতে শুরু করেছেন নেতৃত্বের একাংশ।
পুরভোটের আগে মমতার এই সভা দলের নেতা কর্মীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বের বিষয় হলেও, বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর পুর এলাকাকে বাদ দিয়ে জেলার অত্যন্ত ছোট মাঠ হিসাবে পরিচিত বুনিয়াদপুর মাঠেই এই সভা কেন তা নিয়েও প্রশ্ন জেগেছে দলের নেতা কর্মীদের একাংশের মধ্যে। তবে কি বিপ্লব মিত্রকে দলে ফেরাতেই এই সভা? যে প্রশ্ন এখন উকি মারছে সর্বত্র। দলত্যাগী নেতার ফের দলে ফেরার আঁচে ইতিমধ্যে অনেকেই শুরু করেছেন যোগাযোগ। কেউ ফোনে আবার কেউ সরাসরি গিয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থারও খোঁজ নিয়েছেন। কেউ কেউ আবার কিছুটা ভীতও হয়ে গোপনে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছেন সত্যিই কি বিপ্লবদা ফিরছে দলে! আর সবটা মিলেই জেলা তৃণমূলের অন্দরেই জোর শোরগোল পরিস্থিতি।
যদিও এসব জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন কেউ দলে ফিরছে না। আর কোনও জল্পনায় নেই জেলায়। দলীয় সভা করতেই তৃণমূল সুপ্রিমো আসছে বুনিয়াদপুরে।
লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর দলীয় কোপে পড়ে তৃণমূল ছাড়েন প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। দিল্লিতে গিয়ে যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। এদিকে জেলায় দলের সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে নতুন ভাবে কাজ শুরু করেন অর্পিতা ঘোষ। সাংগঠনিক বিষয় থেকে অন্তর্কলহ, সমস্ত সমস্যার সমাধান একা হাতেই করতে নামেন অর্পিতা। বিজেপিতে যোগ দেবার পর থেকে দলে তেমন গুরুত্ব না পাওয়ায় একপ্রকার গুটিয়েই থাকেন বিপ্লব মিত্র। বেশকিছুদিন নতুন দল থেকেও দুরত্ব বজায় রাখেন তিনি। এদিকে পুরভোটের আগে গঙ্গারামপুর ও বালুরঘাটে গোপনে বিশেষ সমীক্ষায় নামে প্রশান্ত কিশোরের টিম বলে সুত্রের খবর। যাদের দেওয়া রিপোর্টে সামনে আসে দলের নাম করে দুই শহরে সমাজবিরোধীদের আনাগোনা ও নেতাদের একাংশ তোলাবাজির চিত্র, বলেও সুত্রের খবর। পাশাপাশি ওই রিপোর্টে সামনে আনা হয়েছে দুই শহরে যোগ্য নেতৃত্বের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। পুরভোটে দলে বিপ্লবের কামব্যাকের প্রয়োজনীয়তার কথাও বিশেষ ওই রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে বলেও সুত্রের খবর। আর যার ভিত্তিতে রাজ্য নেতৃত্বদের সাথে গোপনে বৈঠক করে তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া সমস্ত পদ ফিরিয়ে দেবার দাবিও জানিয়েছেন বিপ্লব মিত্র বলে সুত্রের খবর। যে দাবিতে সন্মতি প্রকাশ করেই কি মমতার বুনিয়াদপুরের এই সভা? যা নিয়ে জোর জল্পনা এখন দক্ষিন দিনাজপুরে।
যদিও এব্যাপারে বিপ্লব মিত্র তেমন কিছু মন্তব্য করতে চাননি।