আমাদের ভারত, ৭ নভেম্বর: ক্যানিংয়ের একটি ঘটনায় রাজ্য সরকার হাইকোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে। এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, শুধু ক্যানিং নয় বাংলার সমস্ত অঞ্চলে লুট ও বঞ্চনার রেয়াজ কায়েম হয়েছে।
আবারও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বেনিয়ম নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমালোচনায় মুখর হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কলকাতা হাইকোর্টে এই সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তেই হয়েছে। আর তারপরেই আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আবারো সরব হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।
ক্যানিং- এর একটি ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার কার্যত ভুল স্বীকার করে নিতেই আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় সরকারকে। এমনকি সংশ্লিষ্ট বিচারপতি এই ঘটনাকে ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি বলে তীব্র তিরস্কার করেন।
এরপরে বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন সুকান্ত মজুমদার। সেই পোস্টে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার এবং সেই সরকারের প্রশাসনিক প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা দাগেন তিনি।
সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার লাগাতার সমালোচিত হচ্ছে। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন আবাস যোজনা সংক্রান্ত একটি মামলায় মহামান্য হাইকোর্টের ভর্ৎসনা।
সুকান্ত মজুমদার লেখেন, আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে, অনিয়ম করা হচ্ছে। এমনকি যোগ্য উপভোক্তাদের বঞ্চিত করে অযোগ্যদের নামে টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে।
সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, লুঠ ও বঞ্চনার এই রেওয়াজ শুধুমাত্র ক্যানিংয়েই নয়, সারা বাংলায় কায়েম হয়েছে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই লুটের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ একজোট হচ্ছে এবং শীঘ্রই তারা হীরক রানীকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার সরকারকে হীরক রাজার সাথে তুলনা করে হীরক রাণী বলেন পদ্ম নেতৃত্ব। এবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বেনিয়ম নিয়েও রাজ্যকে ফের একবার কোণঠাসা করলেন সুকান্ত মজুমদার।
প্রসঙ্গত, ক্যানিং এক নম্বর ব্লকের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার পাঁচজন বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় ঘরের জন্য আবেদন করলেও তারা সেই টাকা পায়নি। অভিযোগ, আবেদনকারীদের প্রথমে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে জানানো হয় যে, তাদের টাকা আসেনি। পরে বলা হয় ওই টাকা পাওয়ার যোগ্য নন তারা। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন ওই পাঁচজন। সেই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার তার রিপোর্ট পেশ করে জানিয়েছে, ওই পাঁচজন ন্যায্য উপভোক্তার নামে বাড়ি তৈরির টাকা এলেও তা ভুল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। এই ভয়ংকর ভুল শিকারের পরই রাজ্যকে তুলোধনা করেন বিচারপতি রবি কিষান কাপুর। তিনি ঘটনাকে ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি বলে তোপ দাগেন।
রাজ্যের ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৩ নভেম্বর। তার আগে আবাস যোজনা নিয়ে আদালতের ভর্ৎসনায় বেকায়দায় পড়ল তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রেক্ষাপটে আবাস যোজনায় বঞ্চিতদের পাশে থাকার বার্তা দিলো বিজেপি। কিন্তু সেটা কতটা ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হয় সেটাই এখন দেখার।