সাথী দাস, আমাদের ভারত, পুরুলিয়া, ১৭ জানুয়ারি: করোনা আবহে জোড়-বিজোড় নম্বর নীতিতে টোটো চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরুলিয়া পৌরসভা। এর সরাসরি বিরোধিতা করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিল তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি।
আজ সংগঠনের জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমার পুরুলিয়া শহরের সংগঠিত টোটো চালকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, “এখন এমনিতেই যাত্রী কম পাচ্ছেন টোটো চালকরা। তা ছাড়া টোটোর রক্ষণাবেক্ষণ, ঋণ পরিশোধের খরচ রয়েছে। এর উপর মাসে অর্ধেক দিন যদি কাজ না করেন তাঁরা তাহলে পেট চলবে কী করে?” অবিলম্বে পুরসভার সিদ্ধান্ত বদলের দাবি জানিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “পুর সভায় নিবন্ধিত টোটোগুলি যাতে সব দিনই চলে তার জন্য অনুরোধ রাখছি। যদি না হয় তাহলে সাংগঠনিকভাবে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো।”
পুরুলিয়ায় আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘পুরুলিয়া জেলা ই রিক্সা চালক ইউনিয়ন’ এর পক্ষ থেকে পুর বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিকের কাছে সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার জন্য একটি লিখিত আবেদন জানান সংগঠনের সম্পাদক সেক জুবের আলী।
পুরুলিয়া শহরে সরকারিভাবে আঠারোশো টোটো চলাচলের অনুমতি থাকলেও বর্তমানে প্রায় তিন হাজারেরও বেশি টোটো চলাচল করছে পুর এলাকায়। এরই মধ্যে কিছু টোটো বৈধতা ছাড়াই চলছে। জবরদখল আর দোকানের পসরা দোকানের বাইরে সাজানোর কারণে রাস্তার পরিসর কমেছে পুর এলাকায়। ভোট ব্যাংকে ধসের কারণে পুরসভা রাস্তা পরিসর ঠিকঠাক রাখতে উচ্ছেদ করার সাহস দেখায়নি। ফলে শহর পুরুলিয়ায় বাড়ছে যানজট, সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তার উপর অতিরিক্ত টোটো চলাচল করে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট।
শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, লাগামহীন টোটোগুলির চলাচলে কোনও নিয়ম না থাকায়, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে। ফলে একদিকে যেমন যানজট তৈরি হচ্ছে, তেমনি ছোটখাটো দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হচ্ছে পথচলতি মানুষকে। করোনাকালে এই কারণে যানজটের জন্য দূরত্ববিধি লাটে উঠছে শহরে বলে অভিযোগ। তাই, শুধু অনুমোদিত টোটোগুলিকে জোড়-বিজোড় নীতিতে চলাচলের নির্দেশিকা জারি করে পৌরসভা বলে জানান প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান নবেন্দু মাহালি। তিনি বলেন, “সেইমতো হলুদ ও লাল স্টিকার দিয়ে পুরসভার তরফে প্রতিটি টোটোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একদিন লাল স্টিকার লাগানো টোটো চলবে, অন্যদিন চলবে হলুদ স্টিকার লাগানো টোটো। এক্ষেত্রে টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হবে। যানজট নিয়ন্ত্রণে আসবে। এটা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।”
এই নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন এক শ্রেণির টোটো মালিক। ফলে পৌরসভার এই নতুন নিয়ম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে জেলাজুড়ে।