সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২২ ফেব্রুয়ারি: পরিস্থিতি যে ক্রমাগত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে, তার আভাস দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। আর শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকদের আশঙ্কাই সত্যি হল। শনিবার ভোরে থেমে গেল পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় আহত রিষভ সিংয়ের লড়াই।
প্রথম থেকেই দিব্যাংশুর তুলনায় রিষভের অবস্থা ছিল সঙ্কটজনক। ফুসফুসে কাদাপাঁক ঢুকে যাওয়ায় ইসিএমও যন্ত্রের সাহায্যে তা বার করে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ।
অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় শুক্রবারই এসএসকেএম হাসপাতালে কার্ডিওথোরাসিক ভাসকুলার সায়েন্স বিভাগে পূর্ণ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে। মস্তিষ্কে অক্সিজেন না পৌঁছনোয় ব্রেন কাজ করা প্রায় থামিয়ে দিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতালের একধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
শুক্রবার সন্ধের পর থেকেই দ্রুত অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে রিষভের। চিকিৎসকদের সমস্ত প্রচেষ্টাই একে একে বিফলে যেতে শুরু করে। মস্তিষ্কে অক্সিজেন না পৌঁছনোর পাশাপাশি মাল্টি অরগ্যান ফেল হয় রিষভের। খুব দ্রুত ওঠানামা করতে থাকে রক্তচাপ। রাত দশটা নাগাদ পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যায়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রিষভের শরীরে ক্রমশ কমতে থাকে অক্সিজেনের মাত্রা। গত ৪৮ ঘণ্টায় কার্যত অকেজো হয়ে গিয়েছিল তার কিডনি। ডায়ালিসিস করেও সুরাহা হয়নি। কিডনি কাজ না করায় ইউরিন পাস হয়নি। ফলে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছিল রিষভের শরীরে। রক্তে অস্বাভাবিক হারে কমে যায় প্লেটলেটের পরিমাণও। এর পরই শনিবার ভোরে চিকিৎসকদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ করে বিদায় নেয় রিষভ। আর ফের প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেল যাবতীয় সিস্টেমকে। বারবার পুলকার দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরে গেলেও এখনো যে কারোর চোখ খোলেনি, সেটাই ফের প্রমাণ হলো।