লকডাউনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর পর শবর’দের সচেতন করার উদ্যোগ পুরুলিয়ায়

সাথী প্রামানিক, পুরুলিয়া, ১৯ এপ্রিল: দ্বিতীয় পর্যায়ের লকডাউন শুরু হলেও পুরুলিয়া জেলার পিছিয়ে থাকা শবর সম্প্রদায়গুলির কাছে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়নি প্রশাসনের পক্ষ থেকে। জেলার বিভিন্ন ব্লকের প্রায় ১৬৪টি গ্রাম ও টোলায় দুই হাজার শবর পরিবারের বসবাস। যার জনসংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। কঠিন সময়ে সরকারি সুযোগ সুবিধা বা প্রকল্পের কথা এই সব জনজাতির কাছে পৌঁছায়নি।  সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষগুলি স্বাস্থ্য আচরণ বিধি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দোকান বা বাড়ির বাইরে যাওয়া, মুখে মাস্ক পরা, এঁদের কাছে যেন প্রহসনে ঠেকেছে। নুন আনতে পান্তা ফুরায় পরিবারে এই সব জোগাড় করা এবং মেনে চলা কঠিন হয়েছে। আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির কারণে এঁরা নিত্য দিন শুধু মাত্র জীবন ধারণের জন্য লড়াই করেন। 

প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া হিসেবে স্কুলে পড়াশোনা করছে বটে, কিন্তু সেই সব ছেলে মেয়েরা একটা সম্প্রদায়ের আমূল পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা মাঠে মারা যায়। এই সব পরিবারের রেশন কার্ড, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড অনেকেরই হারিয়ে যায়। তা নতুন করে হাতে পাওয়ার উদ্যোগ নেই। নজরদারি নেই জন প্রতিনিধিদেরও। 

আদিম জনজাতির শবর সম্প্রদায়ের মানুষকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার প্রচারে উদ্যোগ নিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সকাল থেকে পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা ব্লকের খুদিটাঁড়, কুলটাঁড় সহ একাধিকক গ্রামে গিয়ে আদিম জনজাতির এই শবর সম্প্রদায় মানুষগুলির মধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ে সচেতনতার প্রচার সারলেন তিনি। মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে কি করা উচিত এবং কি করা উচিত নয়, তা ওই সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষগুলির কাছে তুলে ধরেন। এছাড়াও প্রত্যেককে মাস্ক ব্যবহার করতে বলেন এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকা এবং একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে একটা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও বুঝিয়ে দেন তিনি। যাদের মাস্ক নেই তাদের দেওয়া হয় মাস্ক। প্রতিটি পরিবারের হাতেই এদিন সাবানও তুলে দেন তিনি। 

এছাড়াও এদিন সভাধিপতির সঙ্গে মানবাজার মহকুমার খাদ্য আধিকারিকও যান। রেশনের খাদ্যদ্রব্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন। এঁদের অনেকেই এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়। রেশন দোকানে গিয়ে প্রাপ্য রেশনদ্রব্য সংগ্রহ করার জন্য বলেন ওই আধিকারিক। তাছাড়াও অনেকেরই রেশনকার্ড নেই বা হারিয়ে গেছে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন তিনি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *