স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৩ মে: “মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে গিয়ে দুই ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। দুই সন্তান হারা মা তাদের সন্তানকে আর ফিরে পাবেন না। কিন্তু তারা আশ্বস্ত হবেন ভারতবর্ষের বিচার ব্যবস্থা এখনও বেঁচে আছে, আইন ব্যবস্থা বেঁচে আছে এবং সংবিধান বেঁচে আছে। এই সংবিধানের মাধ্যমেই তারা ন্যায় বিচার পাবেন।”
শনিবার উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের দাঁড়িভিটে দাঁড়িয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তবাবু এদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত রাজেশ ও তাপসের সমাধিস্থলে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান। দাড়িভিট কান্ডে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর আইনি লড়াইয়ের পর কলকাতা হাইকোর্ট এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দেন। বুধবার উচ্চ আদালত এই রায় ঘোষণার পর শনিবার নিহত দুই ছাত্র রাজেশ এবং তাপসের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ২০ সেপ্টম্বর উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের দাঁড়িভিট হাইস্কুলে বাংলা শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মন নামে দুই ছাত্রের। রাজ্য সরকার এই ঘটনার তদন্তভার সিআইডি’র হাতে তুলে দিয়েছিল। কিন্তু মৃত দুই ছাত্রের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে অনড় ছিলেন। সিবিআই তদন্তের দাবিতে মৃতের পরিবার আইনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। এছাড়াও বিজেপির পক্ষ থেকে মৃত পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর শরণাপন্ন হয়ে ঘটনার তদন্তভার সিবিআই’য়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করেছিলেন। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর বুধবার কলকাতার উচ্চ আদালতের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এই মামলার তদন্তভার এনআইএ’র হাতে তুলে দিয়েছেন।
পরিবারকে পাশে নিয়ে আইনি লড়াইয়ে সাফল্য পাওয়ায় শনিবার নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সুকান্তবাবু এদিন কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাদগাঁও গ্রামে পুলিশের গুলিতে মৃত যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে দাড়িভিটে যান। সেখানে নিহত দুই ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সমাধিস্থলে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার।